Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

হেনস্থা জম্মুতে, অভিযোগ বাঙালি গবেষকের 

সপ্তর্ষি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সতর্কতার ফলে জম্মু সীমানাতেই পুলিশের তত্ত্বাবধানে তাঁর দুই জার্মান সহযোগীর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২০ ০৫:৪৬
Share: Save:

গবেষণা করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে প্রশাসনের হাতে হেনস্থার অভিযোগ তুললেন ভূতত্ত্ববিদ সপ্তর্ষি দে। তাঁকে ও তাঁর দুই জার্মান সহযোগীকে কাজ করতে না দিয়ে কার্যত জম্মু-কাশ্মীর থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। কিস্তওয়ারের ডেপুটি কমিশনার রাজেন্দ্র সিংহ তারার বক্তব্য, ‘‘হেনস্থার প্রশ্নই নেই। ওঁর সঙ্গে দু’জন জার্মান নাগরিক ছিলেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে।’’

আইআইটি গাঁধীনগরের ভূবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সপ্তর্ষি জানিয়েছেন, ৪ মার্চ তিনি এবং তাঁর দুই জার্মান সহকর্মী রাসমুস ফিদে ও নিকলাস শাফ লখনপুর সীমানা দিয়ে জম্মুতে ঢোকেন। তাঁরা জম্মু-কিস্তওয়ার এলাকার ভূকম্প প্রবণতা নিয়ে গবেষণা করছেন। সপ্তর্ষি কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

সপ্তর্ষি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সতর্কতার ফলে জম্মু সীমানাতেই পুলিশের তত্ত্বাবধানে তাঁর দুই জার্মান সহযোগীর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তাঁর দাবি, নিকলাস তার আগেই ভারতে ১৪ দিন কাটিয়েছিলেন। ফলে তিনি বিপন্মুক্তই ছিলেন। রাসমুস কাটিয়েছিলেন ১৩ দিন। পুলিশের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে তাঁরা ৬ মার্চ কিস্তওয়ারে পৌঁছন।

৬ মার্চ সারা দিন কাজ করার পরে বিকেলে হোটেলে ফেরেন তাঁরা। সপ্তর্ষির অভিযোগ, বিকেলে বাজারে খাবার কিনে ফেরার পথে তাঁকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে কিস্তওয়ারের ডেপুটি কমিশনার রাজেন্দ্র সিংহ তারার দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বেশ কিছু ক্ষণ সেখানে অপেক্ষার পরে রাজেন্দ্র তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি স্পষ্ট জানান, সপ্তর্ষিদের এখনই জম্মু-কাশ্মীর ছাড়তে হবে। সপ্তর্ষির বক্তব্য, ‘‘আমি জানাই যে আমার দুই জার্মান সহকর্মীর শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে এবং তাঁরা সুস্থ। তাই আমাদের কাজে বাধা দেওয়া আইনসঙ্গত নয়। ডেপুটি কমিশনার জানান, জম্মু-কাশ্মীর ছেড়ে না গেলে আমাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হবে।’’ সপ্তর্ষি জানিয়েছেন, বাধ্য হয়ে তিনি পরের দিন সকালে কিস্তওয়ার ছাড়ার অনুমতি চান। কারণ, রাতে ভূকম্পপ্রবণ কিস্তওয়ারে যাতায়াত করা কঠিন।

ভূতত্ত্ববিদের অভিযোগ, ‘‘পরের দিন কিস্তওয়ার থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে একটি চেকপোস্টে আমাদের আটকায় পুলিশ। কিস্তওয়ারে ফিরে যেতে বলা হয়।’’ সপ্তর্ষির কথায়, ‘‘ডেপুটি কমিশনারকে ফোন করলে তিনি জানান আমরা সরকারি অতিথি। তাই কয়েক দিন তাঁদের কাছেই থাকতে হবে। কাজ করার অনুমতিও দেন।’’

সপ্তর্ষির দাবি, তাঁরা যে হোটেলে ছিলেন সেখানেই ফের রাখা হয় তাঁদের। কিন্তু কাজ করতে দেওয়া হয়নি। কাজে বেরোলেই গ্রেফতারের ভয় দেখায় পুলিশ। সপ্তর্ষির বক্তব্য, ‘‘ডেপুটি কমিশনার জানান, আমার বিরুদ্ধে কোনও কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ নেই। কিন্তু কিস্তওয়ারে গোষ্ঠী সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমাদের বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ শেষ পর্যন্ত স্থানীয় দুই চিকিৎসকের সাহায্যে দুই জার্মান সহকর্মীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নিয়ে জম্মু ছাড়েন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Jammu and Kashmir Geologist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE