Advertisement
E-Paper

আহতদের আর্তনাদ থেকে চিকিৎসকদের ছোটাছুটি, ৪০ ঘণ্টা পরেও বালেশ্বরের হাসপাতালে ‘যুদ্ধপরিস্থিতি’

বালেশ্বর জেলা সদর হাসপাতালের অতিরিক্ত জেলা মেডিক্যাল আধিকারিক (এডিএমও) চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় মিশ্র বলেন, “আমার পেশাগত জীবনে আচমকা এ রকম যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি।”

Balasore District Hospital

বালেশ্বরের হাসপাতালে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩ ১২:০৫
Share
Save

হাসপাতাল, না রণক্ষেত্র! ঠিক যেন ঠাওর করা যাচ্ছিল না। অ্যাম্বুল্যান্সের মুহুর্মুহু সাইরেনের শব্দ। অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে, বেরোচ্ছে, আহতদের নামাচ্ছে, আবার বেরিয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের বাইরে ভিড় উপচে পড়েছিল। স্ট্রেচার নিয়ে হাসপাতালের কর্মীরা আহতদের নামাচ্ছেন এক এক করে, দ্রুত নিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। শুক্রবার রাত থেকে এই ছবি দেখা গিয়েছিল বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে।

হাসপাতালের ভিতরের ছবি আরও শিউরে ওঠার মতো। চারপাশে আর্তনাদ। কারও ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে, কারও ঠাঁই হয়েছে শয্যায়। নার্স, চিকিৎসকরা এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন আহতদের চিকিৎসার জন্য। যে হাসপাতালে শান্ত পরিবেশ ছিল, শুক্রবার রাত থেকেই সেই দৃশ্য বদলে গিয়ে যেন যুদ্ধের ময়দানের চেহারা নিয়েছিল। হাসপাতাল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাহানগা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের আহত যাত্রীদের নিয়ে আসা হচ্ছিল জেলা হাসপাতালে। প্রতি মুহূর্তে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছিল। হাসপাতালের একটি সূত্রের দাবি, শুক্র থেকে শনিবারের মধ্যে ৫২০ জন আহত যাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতালে যত সংখ্যক শয্যা ছিল, আহত যাত্রীদের চিকিৎসার জন্য সেই শয্যাও বাড়ানো হয়। শুধু বালেশ্বর জেলা হাসপাতালই নয়, আহতদের ভর্তি করানো হয় সোরো, ভদ্রক, জাজপুর এবং কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজেও। কিন্তু বালেশ্বর জেলা হাসপাতালের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়ানক হয়ে উঠেছিল। আহতদের আনা যেন থামছিলই না, এমনটাই জানিয়েছে ওই সূত্র। তবে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চেষ্টার কোনও খামতি রাখেননি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে সমস্ত কর্মী।

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বালেশ্বর জেলা সদর হাসপাতালের অতিরিক্ত জেলা মেডিক্যাল আধিকারিক (এডিএমও) চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় মিশ্র বলেন, “আমার পেশাগত জীবনে আচমকাই এ রকম যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। হঠাৎ একসঙ্গে ২৫১ জন আহত যাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হল। আমরা কোনও রকম প্রস্তুতই ছিলাম না। দিশাহারা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তখন। তবে হাসপাতালের সমস্ত কর্মী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সারা রাত ধরে আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে গিয়েছেন।”

এডিএমও আরও জানান, যাঁদের সামান্য চোট ছিল, তাঁদের প্রথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেশি আহতদের জন্য শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বহু আহত যাত্রীকে এসসিবি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “তবে সবচেয়ে যে বিষয়টি আমাকে অবাক করেছে তা হল, হাসপাতালে যখন যাত্রীরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, তাঁদের রক্তদানের জন্য বহু যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী এবং সাধারণ মানুষও হাজির হয়েছিলেন হাসপাতালে। রাতারাতি ৫০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করেছিলাম। এটি সত্যিই একটি অন্য রকম অভিজ্ঞতা।”

Coromandel Express accident Balasore

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}