বদলাপুর স্টেশন আটকে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
বদলাপুরে দুই শিশুকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম মহারাষ্ট্র। তার মাঝেই এ বার অভিযুক্তের বাবা-মা দাবি করলেন, তাঁদের ছেলে নির্দোষ।
মঙ্গলবার ঠাণের বদলাপুরে দুই নার্সারির শিশুকে যৌন নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্র। গত ১৩ অগস্ট বদলাপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে নার্সারির পড়ুয়া দুই শিশুকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল স্কুলেরই এক সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতিত দুই ছাত্রীর বয়স চার। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরে প্রতিবাদে সরব হয় গোটা শহর। বদলাপুর রেল স্টেশন অবরোধ করে সারা দিন ধরে চলে বিক্ষোভ। ট্রেন লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথরও।
বদলাপুরকাণ্ডের অভিযুক্ত পেশায় এক জন পরিচারক। মহারাষ্ট্রের ঠাণে জেলার বদলাপুরে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সাফাইয়ের কাজ করেন তিনি। গত শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার স্থানীয় আদালত ২৬ অগস্ট পর্যন্ত তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অপরাধীর শাস্তি চেয়ে পথে নেমেছেন শয়ে শয়ে মানুষ।
অভিযুক্তের বাবা-মা অবশ্য বলছেন অন্য কথা। বৃহস্পতিবার তাঁর মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ওই স্কুলে গত ১৫ দিন ধরে কাজ করছিল আমার ছেলে। প্রতিদিন সকাল ১১টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছত, বাথরুম পরিষ্কার করত, তার পর সেখান থেকে যেত অন্য জায়গায়। ছেলে নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ ১৩ অগস্টই ঘটনার কথা শোনেন অভিযুক্তের বাবা-মা। এর পর ১৭ তারিখ প্রথমে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্তের মা জানাচ্ছেন, স্কুলের আর এক পরিচারিকার মুখে ছেলের গ্রেফতারির বিষয়ে জানতে পারেন। তাড়াতাড়ি থানায় গিয়ে দেখেন, ছেলেকে মারধর করছে পুলিশ। মারধর করা হয়েছে তাঁর ছোট ছেলেকেও। ধৃতের মা-বাবা আরও জানিয়েছেন, তাঁরাও ওই একই স্কুলে সাফাইয়ের কাজ করতেন। ছেলের শিফ্ট ছিল সকালে, আর বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কাজ করতেন তাঁরা।
অভিভাবকদের কথায়, ‘‘মঙ্গলবার কিছু লোক এসে আমাদের বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। জিনিসপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি পরিবারের সকলকে মারধরও করা হয়েছে। আমাদের কোনও কথাই বলতে দেয়নি। বলেছে আমাদের ছেলেই দোষী, তাই গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, বদলাপুরের ঘটনা নিয়ে বুধবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিল রাজ্যে। মঙ্গলবার সারা দিন বদলাপুর রেল স্টেশন অবরোধ করে চলে ব্যাপক প্রতিবাদ। ট্রেন লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথরও। প্রায় ১০ ঘণ্টা ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয় এই বিক্ষোভের জেরে। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পুলিশকর্মী। ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা এবং শ্রেণিশিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়েও। অভিভাবকদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষও। পরিস্থিতি সামাল দিতে কোথাও কোথাও লাঠিচার্জও করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় অন্তত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ৭২ জন বিক্ষোভকারীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy