দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের ছায়া এ বার উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে। প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে দেহ ছ’টুকরো করলেন এক যুবক। এমনকি, অস্ত্রের কোপে বছর কুড়ির ওই মেয়েটির ধড়-মুন্ডু আলাদা করে দেন তিনি। আজমগড়ের এক যুবকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে। খুনের অভিযোগে শনিবার ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাদের দাবি, রবিবার অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, আজমগড় জেলার ইশকপুর গ্রামের বাসিন্দা আরাধনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত প্রিন্স যাদবের। তবে তাঁকে বিয়ে না করে চলতি বছরের গোড়ায় অন্যের ঘরনি হন আরাধনা। অভিযোগ, এর বদলা নিতেই আরাধনাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষেন তিনি। এ কাজে প্রিন্সের তুতো ভাই সর্বেশ-সহ পরিবারের ৭ জন জড়িত বলেও দাবি তদন্তকারীদের।
১৫ নভেম্বর পশ্চিমী গ্রামের বাইরে একটি কুয়ো থেকে এক তরুণীর অর্ধনগ্ন মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দেহটি উদ্ধার করে। আজমগড়ের পুলিশ সুপার অনুরাগ আর্য সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ওই দেহটি উদ্ধারের সময় তা দু’তিন দিনের পুরনো বলে মনে হচ্ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই দেহটি আরাধনার বলে চিহ্নিত করে।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারীদের দাবি, মা-বাবা, সর্বেশ এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে আরাধনাকে খুনের ছক কষেন প্রিন্স। ৯ নভেম্বর আরাধনাকে নিজের মোটরবাইকে বসিয়ে একটি মন্দিরে নিয়ে যান তিনি। তবে মন্দিরে পৌঁছলে সর্বেশের সাহায্যে আরাধনাকে জোর করে একটি আখক্ষেতে নিয়ে যান। সেখানে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করেন প্রিন্স। এর পর দু’জনে মিলে আরাধনার মাথা কেটে ফেলেন। তাঁর দেহের ছ’টুকরো করে একটি পলিথিনের ব্যাগে পুরে কুয়োয় ফেলে দেন। আরাধনার কাটা মুন্ডুটি ওই আখক্ষেত্রে কাছে একটি পুকুরে ফেলে দেন প্রিন্সরা।
রবিবার প্রিন্সকে সঙ্গে নিয়ে আরাধনার কাটা মুন্ডুটি উদ্ধার করতে যায় পুলিশ। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে আগে থেকেই একটি দেশি পিস্তল লুকিয়ে রেখেছিলেন প্রিন্স। একটি বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে ওই পিস্তল বার করে পুলিশকর্মীদের উপর গুলি চালাতে শুরু করেন অভিযুক্ত। আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালান পুলিশকর্মীরা। সেই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রিন্স। এই ঘটনার প্রিন্সকে পাকড়াও করলেও এখনও অধরা সর্বেশ-সহ অভিযুক্তের পরিবারের ৭ জন।
প্রসঙ্গত, আজমগড়ের এই খুনের অভিযোগ মনে করিয়ে দিচ্ছে শ্রদ্ধা-খুনের ঘটনাকে। দক্ষিণ দিল্লির ছতরপুর পাহাড়ি এলাকার একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ১৮ মে প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহের ৩৫ টুকরো করেন আফতাব। এর পর সেই টুকরোগুলি রাসায়নিক দিয়ে ধুয়েমুছে ফ্রিজ়ে ভরে রাখেন। শ্রদ্ধার দেহাংশ ১৮ রাত ধরে ছতরপুরের জঙ্গলে ফেলতে যেতেন তিনি। এ সবই আফতাব স্বীকার করেছেন বলে দাবি পুলিশের।