ফাইল চিত্র।
রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে মুসলিমদের মসজিদে প্রার্থনা করার অধিকার রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সিদ্ধান্ত, সাংবিধানিক বেঞ্চে এর নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
ইসমাইল ফারুখি বনাম কেন্দ্রীয় সরকার মামলায় ১৯৯৪ সালের রায়ে বলা হয়েছে, মুসলিমরা যে কোনও জায়গায় প্রার্থনা করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টে আজ মুসলিম সংগঠনগুলির তরফে আইনজীবী রাজীব ধবন যুক্তি দেন, এই ধারণা ঠিক নয়। মুসলিমদের কাছে যে কোনও মসজিদেরই গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। তাই মসজিদের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পর্ক নতুন করে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
ধবনের প্রশ্ন, বেআইনি ভাবে ঢুকে মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরেও ওখানে কেন শুধু হিন্দুদেরই প্রার্থনা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে? তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থায় কোনও শিষ্টাচার এখনও বজায় থাকলে, ওই মসজিদ নতুন করে তৈরি করা হোক। অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে হিন্দুদের নয়, প্রার্থনা করার অধিকার দেওয়া হোক মুসলিমদের।’’
বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আদালতে দাবি তুলেছিলেন, অযোধ্যা মামলা শুধুই জমি বিবাদ নয়। রামের জন্মভূমিতে পুজো করা তাঁর সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। জমির অধিকারের চেয়ে যা অনেক বড়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শীর্ষ আদালত আজ জানিয়েছে, স্বামীর আবেদন অন্য উপযুক্ত বেঞ্চ খতিয়ে দেখবে।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আগেই জানিয়েছিল, রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলাকে শুধুমাত্র জমি বিবাদ হিসেবেই দেখা হবে। সেই কারণেই অযোধ্যার গোটা মামলাটি এখনই সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠাতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত। এবং একই কারণে, জমির মালিকানা নিয়ে বিবদমান পক্ষ ছাড়া, অন্য যাবতীয় আবেদনও এ দিন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। শ্যাম বেনেগল, অপর্ণা সেন, তীস্তা সীতলবাড়ের মতো ৩২ জন আবেদন করেছিলেন, হিন্দু বা মুসলমান, কারও পক্ষেই যেন রায় না দেওয়া হয়। তাতে হিংসা ছড়াবে। সেই আবেদনও খারিজ হয়েছে এ দিন।
পুণের শিক্ষাবিদ বিশ্বনাথ কারার আর্জি ছিল, বিতর্কিত জমিতে তিনি নিজের খরচে ‘পিস সেন্টার’ তৈরি করতে চান। সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতা করুক। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর নিজেই মধ্যস্থতা করতে রাজি বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ বিচারপতিরা জানান, তাঁরা মধ্যস্থতার চেষ্টায় যাবেন না। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে সেই চেষ্টা করতে পারেন।
মামলার পরের শুনানি ২৩ মার্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy