ঢোলপুরে সংঘর্ষে আহত পুলিশকর্মী। ছবি: সংগৃহীত।
অসমের দরং জেলায় পুলিশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকার দাবি তুলল কংগ্রেস। শুক্রবার রাজ্যসভার সাংসদ রিপুন বরার নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি, অবিলম্বে দরংয়ের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও তুলেছেন কংগ্রেস নেতারা। ঘটনাচক্রে, দরংয়ের পুলিশ সুপার সুশান্ত বিশ্বশর্মা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ভাই।
বৃহস্পতিবার বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদ করতে গিয়ে অসমের দরং জেলার সিপাঝারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। ঢোলপুর-৩ অঞ্চলের গুরুকুঠি গ্রামের কাছে পুলিশের গুলিতে দুই ‘জবরদখলকারী’ নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েক জন। নিহত দুই ব্যক্তির নাম সাদ্দাম হোসেন এবং শেখ ফরিদ।
পুলিশ এবং রাজ্যের শাসকদল বিজেপি-র অভিযোগ, কয়েকশো ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ওই এলাকায় অনেক জমি জবরদখল করেছেন। তাঁদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েই গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। ১১ জন আহত পুলিশকর্মী এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে প্রশাসন জানিয়েছে। পুলিশ সুপার সুশান্ত বলেন, ‘‘লাঠি এবং ধারাল অস্ত্র নিয়ে পুলিশকর্মীদের আঘাত করেছে জবরদখলকারীরা।’’
গত ৭ জুন ঢোলপুর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। টুইটারে সে কথা জানিয়ে দাবি করেছিলেন, স্থানীয় শিবমন্দিরের ১২০ বিঘা জমি জবরদখল-মুক্ত করা হচ্ছে। অসমের প্রতিটি প্রান্তকে জবরদখল-মুক্ত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, হিমন্তের ভাই সুশান্ত বর্তমানে দরং জেলার পুলিশ সুপার। ফলে পুরো বিষয়টিতে রাজনীতির রং লেগেছে।
অসমের সাংসদ তথা লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতা গৌরব গগৈ শুক্রবার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পুলিশ সুপার ভাই মিলে অশান্তি ছড়াচ্ছেন। বৃহস্পতিবার পুলিশের আচরণ প্রমাণ করছে, শান্তিপূর্ণ ভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কোনও সদিচ্ছাই ছিল না।’’ পাশাপাশি টুইটারকে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সরকারের অভিযোগের সঙ্গে এনআরসি খসড়া তালিকার তথ্য কিন্তু মিলছে না।’
The Chief Minister Himanta Biswa Sarma’s own brother is the Superintendent Police of the Darrang district where the barbaric violence took place. It is clear that this CM-SP duo did not want a peaceful resolution to the eviction drive. The CM continues to bring shame to Assam.
— Gaurav Gogoi (@GauravGogoiAsm) September 23, 2021
সিপাঝার-কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল, ‘অসম মাইনরিটিজ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আমসু) এবং ‘জমিয়ত-ই-উলেমায়ে হিন্দ’। উজান এবং নিম্ন অসমের বিভিন্ন এলাকাতেই তার প্রভাব পড়েছে। সুশান্ত-সহ অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি আমসু-র তরফে নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ এবং আহতদের ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তোলা হয়েছে। পুলিশের গুলিতে হতাহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শুক্রবার বাধার মুখে পড়েন কংগ্রেস নেতারা। ঢোলপুর গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের আটকায় পুলিশ।
একটি ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, লাঠিধারী নিসঙ্গ এক ব্যক্তিকে খুব কাছ থেকে সরাসরি বুকে গুলি করছে পুলিশ! এমনকি, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরে গলায় ক্যামেরা ঝোলানো এক ব্যক্তিকে তাঁর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুসি চালাতেও দেখা গিয়েছে ভিডিয়োয়! বিজয় বানিয়া নামে ওই ব্যক্তি পুলিশেরই ভাড়া করা চিত্রগ্রাহক। তাঁকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে সিআইডি। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত জানিয়েছেন, এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিশন গড়ে পুরো ঘটনার তদন্ত করবে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy