নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে অসমের চারটি সংগঠনের বক্তব্য শুনল যৌথ সংসদীয় কমিটি। নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতি, হিন্দু লিগ্যাল সেল, বাঙালি যুব ছাত্র পরিষদ ও বাঙালি জাতীয় পরিষদ— সবাই বিলের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন।
লিগ্যাল সেলের প্রতিনিধি মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। তাঁকে সাহায্য করেন ধর্মানন্দ দেব ও দিলীপকুমার দাস। নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতির প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নৃপেন্দ্রচন্দ্র সাহা ও প্রধান সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ। চার সংগঠনের অধিকাংশ সদস্য সাংসদদের নানা প্রশ্নের জবাবে বলেন, কাকে নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত নয়, তা নিয়ে তাঁদের কোনও বক্তব্য নেই। এই বিষয়টি সাংসদরাই ভাল বুঝবেন। তাঁরা শুধু চাইছেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নির্যাতিত হয়ে আসা মানুষগুলি যেন নিরাপদে বসবাস করতে পারেন। তাঁদের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করার দাবি তাঁদের। এমনকী প্রস্তাবিত সংশোধনীর দরুন অসম চুক্তির কী হবে, তা নিয়েও তাঁরা মন্তব্য করতে নারাজ। অধিকাংশের বক্তব্য, সে সব খুটিনাটি বিষয় আইনপ্রণেতারা খতিয়ে দেখুন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়া চাই।
বিলের পক্ষের চার সংগঠনকে আজ দিল্লিতে ডাকতেই সারা অসম ছাত্র সংস্থা (আসু) প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছে। তাদের অভিযোগ, সংসদীয় দল বেছে বেছে বাঙালি সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলছে। তাদের মতামত জানতে চাইছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদীয় কমিটির এক সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৯ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তার মধ্যে শতাধিক পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে। সকলের কথা যেমন শোনা সম্ভব নয়, তেমন যাঁদের ডাকা হবে, তাঁদের সবাইকেও এক দিনে আসতে বলা যাবে না। ফলে নির্ধারিত সময়সীমায় আসু কোনও প্রস্তাব পাঠিয়ে সাক্ষাৎপ্রার্থী হলে এখনই অধৈর্য হয়ে ওঠার কোনও কারণ নেই। সূত্রটি বলেন, ‘‘অসমে বাংলাদেশি মূল সমস্যা বলে মনে হলেও বিলটি বিভিন্ন রাজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সংখ্যালঘু নাগরিকরা পঞ্জাব-রাজস্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। ফলে অসমই শুধু নয়, বিল নিয়ে মতামত প্রকাশ করতে চেয়েছে অন্যান্য রাজ্যের সংগঠনগুলিও।’’ তিনি জানান, এক মাস স্থানীয় সংগঠনগুলিকে ডেকে কথা বলবে যৌথ সংসদীয় কমিটি। পরে যৌথ কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক হবে। নিজেদের অবস্থান তখন স্পষ্ট করবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সব শেষে রিপোর্ট তৈরি করে সংসদে পেশ করা হবে। আজ যৌথ সংসদীয় দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সকলের বক্তব্য শোনেন শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবও। তবে এই পর্বটি অত্যন্ত গোপনীয় বলে তিনি মুখ খুলতে চাননি। শুধু সকলকে ধৈর্য ধরতে বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন শুধুই শোনার সময়।’’
এ দিকে, অসমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে অগপ সভাপতি তথা কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের দল আগের মতেই অটল। ১৯৭১ সালের পরে ভারতে আসা আর কোনও বাংলাদেশির ভার নেবে না অসম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy