অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।
পটনায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কৌশলে চাপে পড়ে গিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অধ্যাদেশের প্রশ্নে কংগ্রেস এখনই অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছিল না। কংগ্রেসের মত ছিল, সংসদের অধিবেশনের আগেই সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে। না হলে সংসদে বিল এলে তখন অবস্থান নেওয়া যাবে। তার আগে কেজরীওয়ালের সঙ্গে তাঁর কংগ্রেস-বিরোধিতার সুর নরম করাতে দর কষাকষি করা যাবে। কিন্তু শুক্রবার পটনার বৈঠকে অরবিন্দ কেজরীওয়াল প্রশ্ন তুলেছেন, বাকি সবাই এ বিষয়ে একমত হলেও কেন কংগ্রেস তাঁকে সমর্থন করছে না! বৈঠকের পরেও বিবৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কংগ্রেস সমর্থন না করলে জুলাই মাসে পরের বিরোধী বৈঠকে তাঁর পক্ষে যোগ দেওয়া কঠিন হবে।
শুক্রবার পটনার বৈঠকের মধ্যেই খড়্গে কেজরীওয়ালকে তাঁর ও তাঁর দলের নেতাদের কংগ্রেস সম্পর্কে আক্রমণাত্মক বিবৃতি পড়ে শুনিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে আপ-এর এক মুখপাত্র রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। সেটাও পড়ে শুনিয়ে খড়্গে কেজরীকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘আপনি কি আমাদের গালিগালাজ করে আমাদের সমর্থন চাইছেন?’’ বৈঠকের মধ্যে এই সব তোপ দাগলেও কেজরীর চালে কংগ্রেস কিন্তু শেষমেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। এত দিন কংগ্রেস সংসদের বাদল অধিবেশনের সময় বিল এলে তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ঠিক করে রেখেছিল। এখন তার আগেই জুলাই মাসে শিমলায় বিরোধীদের পরের বৈঠক হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেখানে আম আদমি পার্টি না এলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই বিরোধী জোটে ফাটল ধরানোর অভিযোগ উঠবে।
এই চাপের মুখে আজ দিল্লি ও পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতারা কেজরীওয়ালকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করেছেন। দিল্লির অজয় মাকেন, সন্দীপ দীক্ষিত, পঞ্জাবের প্রতাপ সিংহ বাজওয়ার মতো কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, কেজরীওয়াল নিজেই বিভিন্ন সময়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ রদকে কেজরীওয়াল সমর্থন করেছিলেন। মোদী সরকার তিন বিতর্কিত কৃষি আইন আনার সঙ্গে সঙ্গে একমাত্র কেজরীওয়ালই তা দিল্লিতে রূপায়ণ করেছিলেন। এখন দুর্নীতির অভিযোগে জেল-যাত্রার ভয়ে দিল্লির আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে চাইছেন। দিল্লি ও পঞ্জাবে আম আদমি পার্টি কংগ্রেসকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আপ অন্য রাজ্যেও কংগ্রেসের ভোটে ভাঙন ধরাচ্ছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ রয়েছে।
মোদী সরকার না কি কেজরীওয়াল সরকার, দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কেজরীওয়ালের পক্ষে রায় দিলেও মোদী সরকার অধ্যাদেশ জারি করে নিজের হাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। সব দলের সমর্থন নিয়ে কেজরীওয়াল রাজ্যসভায় সেই অধ্যাদেশ আটকাতে চাইছেন। কেজরীওয়ালের দাবি, পটনার বৈঠকে হাজির যে সব দলের রাজ্যসভায় সাংসদ রয়েছে, তাদের মধ্যে কংগ্রেস ছাড়া বাকি সবাই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করবে। কেজরীওয়াল অধ্যাদেশ নিয়ে সমর্থন চেয়ে রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দেখা করার সময় চাইলেও তাঁরা এত দিন দেখা করেননি। এখন রাহুল, খড়্গেরা কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করে এই বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করবেন কি না, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy