পরীক্ষা শেষ। বিমান থেকে নেমে আসছেন অরূপ রাহা। (ইনসেটে) তেজস। বেঙ্গালুরুতে। ছবি: বায়ুসেনার সৌজন্যে।
এক দিকে পাকিস্তান, অন্য দিকে চিন। কিন্তু যথেষ্ট সংখ্যক যুদ্ধবিমান নেই ভারতের বায়ুসেনার হাতে। তাই দেশে তৈরি হালকা ওজনের যুদ্ধবিমান ‘তেজস’ দিয়ে সেই অভাব পূরণ করা যায় কি না বুঝতে, আজ নিজেই ওই যুদ্ধবিমান চালিয়ে দেখলেন বায়ুসেনা প্রধান অরূপ রাহা।
বায়ুসেনার এই বাঙালি প্রধান নিজে পোড়খাওয়া পাইলট। কিন্তু ৬১ বছর বয়সে সচরাচর কোনও বায়ুসেনা প্রধান যুদ্ধবিমান ওড়ান না। অরূপবাবুই প্রথম বায়ুসেনা প্রধান, যিনি দেশে তৈরি যুদ্ধবিমান ওড়ালেন। আজ অরূপবাবু বেঙ্গালুরুতে গিয়ে ৩০ মিনিট তেজস (নামটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর দেওয়া) উড়িয়েছেন। বিমানের টেক অফ, উচ্চতা বাড়ানো ও বাঁক নেওয়া, ইজরায়েলি রেডার, হেলমেটে লাগানো লক্ষ্যভেদ ব্যবস্থা, আকাশ থেকে আকাশে এবং আকাশ থেকে মাটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ব্যবস্থাও পরীক্ষা করে দেখেন তিনি। দু’আসনের বিমানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন। উড়ান শেষে অরূপবাবু বলেন, ‘‘বায়ুসেনার অভিযানে এই বিমানকে কাজে লাগালে ভালই হবে।’’
পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার ৪৫ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান প্রয়োজন। কিন্তু রয়েছে মাত্র ৩৩ স্কোয়াড্রন। একেকটি স্কোয়াড্রনে গড়ে ১৬ থেকে ১৮টি বিমান রয়েছে। এর মধ্যে ১১ স্কোয়াড্রনই হলো বুড়িয়ে যাওয়া মিগ-২১ ও মিগ-২৭ বিমান। গত ৩৩ বছর ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল-এ (হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড) তেজস তৈরির প্রক্রিয়া চলেছে। অবশেষে বায়ুসেনার মানদণ্ড ছুঁতে পেরেছে তারা। আশা করা হচ্ছে, জুলাই মাসের মধ্যে চারটি তেজস নিয়ে প্রথম স্কোয়াড্রন তৈরি হয়ে যাবে। তবে এখনও যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি তৈরি হয়নি এই বিমান। আজ যে বিমানটি উড়িয়েছেন অরূপবাবু, সেটি প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি। দৃষ্টিশক্তির বাইরে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া, অত্যাধুনিক রেডার বা মাঝআকাশে জ্বালানি ভরার ব্যবস্থা তৈরির কাজ এখনও চলছে। তার জন্য আরও দু’তিন বছর লাগবে। এক একটি তেজস তৈরি করতে খরচ পড়ছে ২৭৫ থেকে ৩০০ কোটি টাকা।
বায়ুসেনার কর্তারা অবশ্য বলছেন, হালকা ওজনের তেজস দিয়ে রাফায়েল-এর মতো যুদ্ধবিমানের অভাব পূরণ হবে না। তেজস মাত্র ৪০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে উড়তে পারে। মূলত দেশের সীমানায় সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্যই চেজার ব্যবহার হতে পারে। শত্রু রাষ্ট্রের সীমানায় ঢুকে হানা চালিয়ে আসতে সুখোই বা রাফায়েলের মতো যুদ্ধবিমানেরই দরকার। কারণ তাদের অস্ত্রবহণ ক্ষমতা অনেক বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy