করমর্দন: শাহকে অভিনন্দন মোদীর। মঙ্গলবার সংসদে। ছবি: পিটিআই।
অতঃপর!
দল প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দাবি ছিল, ক্ষমতায় এলে প্রত্যাহার করা হবে কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। অবশেষে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিতীয় পর্বে বাতিল হল সেই অনুচ্ছেদ। বিশেষ মর্যাদা হারাল জম্মু-কাশ্মীর। রাজ্য থেকে পরিণত হল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারের পরবর্তী লক্ষ্যই হল পাক অধিকৃত কাশ্মীর।
তার মানে এই নয় যে, আগামিকাল থেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর অভিযানে নেমে পড়বে ভারত। অদূর ভবিষ্যতেও সেই সম্ভাবনা কম। এক বিরোধী নেতার কথায়, ‘‘অন্তত ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কিছু হবে বলে মনে হয় না।’’ বিরোধীরা এ কথা বললেও আজ শাহ লোকসভায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর নজর রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। যার জন্য তিনি প্রয়োজনে প্রাণ দিতে প্রস্তুত।
আজ জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল পেশের সময় প্রথম পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তোলেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি পাক অধিকৃত কাশ্মীর প্রসঙ্গে সরকার কী ভাবছে, তা জানতে চান। দৃশ্যতই রেগে যান শাহ। বলেন, ‘‘যখন আমি জম্মু-কাশ্মীরের কথা বলি, তখন তার মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরও থাকে।’’ বিরোধীরা তাঁর বক্তৃতায় বাধা দেওয়ায় আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন শাহ। গলার সুর কয়েক ধাপ চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ।’’ এর পরে কেন তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শাহ পাল্টা প্রশ্নে কংগ্রেসের কাছে জানতে চান, ‘‘আপনারা কি পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অংশ বলে মনে করেন না? উত্তেজিত হওয়ার কথা বলছেন। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য আমি প্রাণ দিতে প্রস্তুত।’’
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দিকে মোদীর ভারত যে হাত বাড়াতে পারে, সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মোদী সরকারের প্রথম পর্বে দিল্লিতে নিযুক্ত প্রাক্তন পাক হাইকমিশনার আব্দুল বসিত। ভারতে থাকাকালীন সঙ্ঘ পরিবারের সাধারণ সম্পাদক তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা রাম মাধবের সঙ্গে একটি বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে তিনি মুখ খুলেছেন সে-দেশের সংবাদমাধ্যমে। বসিত বলেন, ‘‘সেই সময় রাম মাধব আমায় বলেছিলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ তো যে-কোনও দিন বাতিল করবে সরকার। আমাদের লক্ষ্য হল, পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে জোড়া।’’ আগামী দিনে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারত ওই পদক্ষেপ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন ওই পাক আমলা।
আজ কিছুটা সেই প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা জম্মু-কাশ্মীরের সাংসদ জিতেন্দ্র সিংহ। নরসিংহ রাওয়ের সরকারের আমলে পুনর্দখল প্রশ্নে একটি প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘আর একটি সমস্যাই বাকি রয়ে গেল। তা হল, পাক অধিকৃত কাশ্মীর। কী করে তা ফেরত আনা যায়, এখন তা ভাবতে হবে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করব বিষয়টি দেখার জন্য।’’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, ভারতের নিরাপত্তার জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দখল নেওয়া প্রয়োজন। কারণ পাকিস্তানের অধিকাংশ জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির ও লঞ্চ প্যাডগুলি রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই।
রাজনৈতিক ভাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সমস্যার জন্য আজ জওহরলাল নেহরুকেই দায়ী করেছেন শাহ। জবাবি বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় ফৌজের পাল্টা হামলায় যখন পাকিস্তানি হানাদারেরা পালিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় কারও সঙ্গে আলোচনা না-করেই একতরফা রেডিয়োর মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দেন নেহরু। সমস্যাটিকে নিয়ে গিয়ে ফেলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের আঙিনায়। সেই সময় সেনাকে না-আটকালে আজ পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অংশ হত। কাশ্মীর সমস্যাই তৈরি হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy