পুঞ্চে সেনার টহলদারি। ছবি: পিটিআই।
পুঞ্চের রাজৌরিতে গত কালের হামলার পরে জঙ্গিরা নিহত সেনাদের মুণ্ডচ্ছেদ করেছে বলে দাবি সেনা সূত্রের। নিহত সেনাদের দেহে মাল্যদানের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেনা। সূত্রের খবর, অনেক দেহাংশ উদ্ধার না করতে পারার ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখনও নিহত সেনাদের পরিচয় জানায়নি বাহিনী। জঙ্গিদের খোঁজে ডেরা কি গলি ও বালফাইজ়ের মধ্যের জঙ্গলে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী।
অন্য দিকে এই হামলার জেরে জেরার জন্য হেফাজতে নেওয়া দুই গ্রামবাসীর সেনা হেফাজতে অত্যাচারের ফলে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহতদের দেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এই ঘটনা নিয়ে সেনা এখনও মুখ খোলেনি।
বুধবার রাত থেকেই ডেরা কি গলি এলাকায় জঙ্গি-দমন অভিযানে নেমেছিল সেনা। গত কাল বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ ডেরা কি গলি ও বালফাইজ়ের মধ্যের জঙ্গলে রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের দু’টি গাড়িতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে মোট পাঁচ জন সেনা নিহত হন।
এ দিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান সেনার ১৬ নম্বর কোরের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল সন্দীপ জৈন ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি আর আর স্বৈন। সঙ্গে ছিল এনআইএ-র তদন্তকারী দল। গত কাল সেনা হামলাকারীদের জবাব দিলেও তার পর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। জঙ্গলে তল্লাশি চালাচ্ছে ৯ নম্বর প্যারা, ৪৮ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এসওজি-র যৌথ বাহিনী।
গত কালই হামলার দায় স্বীকার করেছিল ‘দ্য পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট’ (পিএএফএফ)। আজ ঘটনাস্থলের ছবি-ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকায় তৈরি এম-৪ কার্বাইন ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। নিহত সেনাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পালাতেও দেখা যাচ্ছে তাদের।
সেনা সূত্রের দাবি, গত কালের হামলায় ইস্পাত-বুলেট ব্যবহার করে জঙ্গিরা। এই বুলেট সেনার গাড়ির বর্ম ভেদ করতে পারে। সেনা সূত্রের দাবি, গত কালের হামলার পরে সেনার গাড়িতে উঠে পড়েছিল জঙ্গিরা। নিহত সেনাদের মুণ্ডচ্ছেদ করে তারা। তার পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পালায়।
গোয়েন্দাদের মতে, পিএএফএফ লস্কর ই তইবা ও জইশ ই মহম্মদের শাখা সংগঠন। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে এই সংগঠনটিকে মদত দেওয়া শুরু করেছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সব জঙ্গি হামলারই দায় স্বীকার করেছে পিএএফএফ। গোয়েন্দাদের মতে, পিএএফএফ জঙ্গিরা সেনার মতোই হেলমেটে লাগানো ক্যামেরা ব্যবহার করে। পরে ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো প্রচারের কাজে ব্যবহার করে তারা।
আজ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলফাইজ়ের সাওয়ানি গ্রাম থেকে ৩৬ জন গ্রামবাসীকে আটক করে সেনা। তাঁদের মধ্যে বছর তিরিশের রেয়াজ় আহমেদ ও বছর ছাব্বিশের শওকত হুসেনের সেনা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। রেয়াজ় ও শওকতের দেহ নিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় বলফাইজ়ের পুঞ্চ চক এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।
পুঞ্চের এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন আমেরিকাবাসী খলিস্তানি নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন। পঞ্জাবের পাশাপাশি কাশ্মীরের সঙ্গেও নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি। পন্নুনের দাবি, তিনি এখন ‘কাশ্মীর-খলিস্তান রেফারেন্ডাম ফ্রন্ট’-এর নেতা। পন্নুনের কথায়, ‘‘কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে ভারতের হিংসার ফল হল পুঞ্চের হামলা।’’ গোয়েন্দাদের বক্তব্য, পন্নুনের সঙ্গে আইএসআইয়ের যোগের প্রমাণ আগেই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর এ দিনের বক্তব্য থেকে সেই যোগের আরও স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy