প্রতীকী ছবি।
সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমারের দুর্গম জঙ্গলে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করার সময় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন এই সেনাকর্তা। কিন্তু সভ্যতার সীমাও লঙ্ঘন করে ফেললেন। বাহিনীরই এক মহিলা অফিসারকে জোর করে চুমু খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেজর জেনারেল পদমর্যাদার এই অফিসারের বিরুদ্ধে। দুঃসাহসিক অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়ার সুবাদে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু মহিলা সেনা অফিসারের অভিযোগের জেরে মেজর জেনারেল এখন কোর্ট মার্শালের দোরগোড়ায়। বড়সড় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে তাঁকে।
উত্তর-পূর্ব ভারতে সক্রিয় বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটি মায়ানমারের পাহাড় ঘেরা দুর্গম জঙ্গলে। ভারতীয় বাহিনী একাধিক বার সীমান্ত পেরিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে মায়ানমারের জঙ্গলে। তেমনই এক দুঃসাহসিক অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসাম রাইফেলসের নর্দার্ন জোনের ইনস্পেক্টর জেনারেল হিসেবে কোহিমায় কর্মরত এই আধিকারিক। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ১৯ অক্টোবর রাতে তিনি ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার এক মহিলা অফিসারকে নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান। তিন বাহিনীর আইন সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে যে জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল বা জেএজি শাখা, ওই মহিলা সেই জেএজি-তেই কর্মরত। ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার ওই মহিলা আধিকারিক অভিযোগ করেছেন, কাজ শেষ হওয়ার পর মেজর জেনারেল পদমর্যাদার ওই আধিকারিক তাঁর কাছ থেকে চুম্বন চান। এর পর নিজেই খুব কাছে চলে আসেন এবং জোর করে তাঁর গালে ও ঠোঁটে চুমু খান। কোনও ক্রমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে মেজর জেনারেলের বাংলো থেকে সে রাতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। অভিযোগ পত্রে নাকি তেমনই লেখা রয়েছে। এর পরেও একাধিক বার ফোন করে এবং নিজের অধস্তন কর্মচারীকে দিয়ে বার্তা পাঠিয়ে অনেক বার ওই ক্যাপ্টেনকে মেজর জেনারেল দেখা করতে বলেছিলেন বলে অভিযোগ।
মহিলা অফিসার মেজর জেনারেল তথা আসাম রাইফেলসের ইনস্পেক্টর জেনারেল পদে থাকা ওই সেনাকর্তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতেই ঘটনার বিচার শুরু হয়েছে। যে ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে, তাঁদের দাবি, অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর অভিযুক্ত মেজর জেনারেল ও তাঁর স্ত্রী অভিযোগকারিনীর সঙ্গে দেখা করেন এবং অভিযোগ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। রাজপুতানা রেজিমেন্ট থেকে উত্তর-পূর্বে কাজ করতে আসা এই আধিকারিক ৩০ বছর বাহিনীতে রয়েছেন এবং দুঃসাহসিক কাজের জন্য সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু এই অভিযোগের জেরে তাঁর কর্মজীবন আচমকা শেষ হয়ে যেতে পারে এবং তাঁকে খুব বড় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। সাজার হাত থেকে বাঁচতেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মেজর জেনারেল ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু অভিযোগকারিনী নিজের অবস্থান থেকে কিছুতেই পিছু হঠেননি।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে ছুরি মেরে রক্তাক্ত দেহের পাশে তিন ঘণ্টা বসে রইলেন চিকিৎসক!
মেজর জেনারেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তা এতই গুরুতর যে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য সেনা কোনও ‘কোর্ট অব এনকোয়্যারি’ গঠন করেনি। সরাসরি বিচার শুরু করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে ইংরেজি সংবাদমাধ্যমটি এমনই দাবি করেছে। সেনা আদালত ইতিমধ্যেই দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে নিয়েছেন এবং এখন ‘সামারি অব এভিডেন্স’ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গিয়েছে। এই পর্যায়েই সাক্ষীদের বয়ান এবং অভিযোগকারিনী ও অভিযুক্তের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে সেনা আদালত সিদ্ধান্ত নেয়, অভিযুক্ত দোষী কি না। যদি দোষী সাব্যস্ত হন, মেজর জেনারেলকে তা হলে ‘কোর্ট মার্শাল’-এর সম্মুখীন হতে হবে এবং বড়সড় সাজার মুখে পড়তে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy