Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Amritpal Singh

অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয় জর্জিয়া, কৃষি আন্দোলনে দেখে অমৃতপালকে বাছে আইএসআই

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, দুবাই আইএসআইয়ের অন্যতম বড় ঘাঁটি। কৃষি আন্দোলনে অমৃতপালের ভূমিকা দেখে তাঁকে বেছে নেয় পাক গুপ্তচর সংস্থা। শুরু হয় মগজধোলাই।

Amritpal Singh

‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের নেতা অমৃতপাল সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৫
Share: Save:

অপেক্ষা ছিল অমৃতসরে জি২০ সম্মেলনের বৈঠক শেষ হওয়ার। গত ১৫-১৭ মার্চের সেই বৈঠক শেষ হতেই ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের নেতা অমৃতপাল সিংহকে ধরতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র ও পঞ্জাব পুলিশের যৌথ বাহিনী। খলিস্তানপন্থী নেতা এখনও অধরা হলেও পঞ্জাব পুলিশের দাবি, তাঁর পালানোর বৃত্ত ছোট হয়ে আসছে। যে কোনও মুহূর্তে ধরা পড়বেন অমৃতপাল। গোয়েন্দাদের মতে, কাশ্মীরে জঙ্গিদের উপদ্রব কমে আসায় অমৃতপালের মাধ্যমে পঞ্জাবে অশান্তির ছক কষেছিল আইএসআই। খলিস্তানপন্থী আন্দোলনে হাওয়া দিতে সীমান্তের ও-পার থেকে জোগানো হচ্ছিল প্রচুর অস্ত্র, রসদ, মাদক। গত এক বছরে সীমান্তে ড্রোনের মাধ্যমে মাদকের চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় অমৃতপালের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।

দেশে কৃষক আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভাবে যোগ দিয়েছিলেন অমৃতপাল। তা শেষ হওয়ার পরে তিনি দুবাইয়ে পারিবারিক ব্যবসা সামলাতে ফিরে যান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, দুবাই আইএসআইয়ের অন্যতম বড় ঘাঁটি। কৃষি আন্দোলনে অমৃতপালের ভূমিকা দেখে তাঁকে বেছে নেয় পাক গুপ্তচর সংস্থা। শুরু হয় মগজধোলাই। অতীতের খলিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না অমৃতপালের। কিন্তু আইএসআইয়ের সংস্পর্শে এসেই তিনি খলিস্তানি আন্দোলন নিয়ে দুবাইয়ে প্রচার শুরু করেন। গোয়েন্দাদের দাবি, অমৃতপালকে জর্জিয়াতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতেও পাঠায় আইএসআই। শেষে দুবাই হয়ে পাঠানো হয় ভারতে। এক স্বরাষ্ট্রকর্তার মতে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর থেকে কাশ্মীরে কার্যত বড় হামলা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নতুন ঘুঁটি প্রয়োজন ছিল আইএসআইয়ের। পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের আগের রাজনৈতিক টালমাটাল এবং আপের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নিয়ে ফের ওই রাজ্যে খলিস্তানপন্থী আন্দোলন উস্কে দিতে পাক গুপ্তচরেরা মাঠে নামায় অমৃতপালকে। তাদের মদতে লন্ডন, কানাডা, জার্মানি, আমেরিকাতেও খলিস্তানপন্থীরা পথে নামে।

গোয়েন্দাদের দাবি, দুবাই থেকে পঞ্জাবে এসে মাদক-বিরোধী মঞ্চ গড়ে তোলার আড়ালে খলিস্তানপন্থী আন্দোলনের সমর্থনে দল বাড়ান অমৃতপাল। তাঁর মাদক-মুক্তি কেন্দ্রে মাদকাসক্তদের এত নিম্ন মানের ওষুধ দেওয়া হত, যে তাঁরা উল্টে মাদকে আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়তেন। মেরেধরে এঁদের নিয়ে যাওয়া হত ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’-র কর্মসূচিতে। অমৃতপালকে মার্সিডিজ় গাড়ি দিয়েছিল মাদক মাফিয়া রাভেল সিংহ। সীমান্ত-পারের মাদক পাচারকারী বিল্লা, বিলাল ও রানার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও মাদকের লেনদেন হত অমৃতপালের। সেতু ছিল আইএসআই। গোড়ায় অমৃতপালের সক্রিয়তা রুখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয় পঞ্জাব পুলিশ। গত ২ মার্চ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান দিল্লি এসে কেন্দ্রীয়স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। সূত্রের মতে, কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চান তিনি। ঠিক হয়, ১৫-১৭ মার্চ অমৃতসরে জি২০ সংক্রান্ত বৈঠকটি নির্বিঘ্নে সেরে ফেলার পরে অমৃতপালকে গ্রেফতার করা হবে। প্রায় ১৫ কোম্পানি আধাসেনা আসে অমৃতসরে। শুরু হয় অমৃতপালকে ধরতে অভিযান, যা এখনও নিষ্ফলা।

অন্য বিষয়গুলি:

Amritpal Singh Punjab Punjab Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy