বিরোধীদের ধারাবাহিক ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে, প্রথম বার মুখ খুললেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। ফাইল ছবি।
কর্নাটকের বিজেপি সরকার ‘৪০ শতাংশ কমিশনখোর’ বলে গোড়া থেকেই প্রচারের সুর বেঁধে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। বিরোধীরা ধারাবাহিক ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় রীতিমতো অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আজ এ প্রশ্নে প্রথম বার মুখ খুলে বিজেপি নেতা অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেসের কাছে নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলে তাঁদের উচিত আদালতে যাওয়া। সঙ্গে মেরুকরণের তাসও খেললেন সংরক্ষণ প্রশ্নে।
পাশাপাশি কংগ্রেসের সঙ্গে দলের বিক্ষুব্ধদের হাত মেলানো নিয়েও যথেষ্ট চিন্তায় বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষ করে জগদীশ শেট্টার বা লক্ষ্মণ সাদাভির মতো বড় নেতাদের টিকিট না দিয়ে লিঙ্গায়েতদের বিজেপি উপেক্ষা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন শেট্টার। রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, “আসলে বর্তমান সরকারের ৪০ শতাংশ কমিশনের নীতির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারেননি শেট্টার। তাই তাঁর টিকিট কাটা গিয়েছে।”
শেট্টার প্রসঙ্গে আজ বিক্ষুব্ধ ওই নেতার কেন্দ্র হুবলিতে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ দাবি করেন, “জেতা-হারার বিষয়টি মাথায় রেখেই টিকিট বণ্টন করা হয়েছে। তবে শেট্টার এ যাত্রায় হারছেন, কারণ হুবলি সর্বদা বিজেপির পাশেই থেকেছে।” একই সঙ্গে লিঙ্গায়েত সমাজকে বঞ্চনা করার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন শাহ। তিনি বলেন, “লিঙ্গায়েতরা বরাবরই বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন।” অমিত ওই দাবি করলেও, বিজেপি সূত্র বলছে, লক্ষ্মণ ও শেট্টারের কারণে এ বার লিঙ্গায়েত ভোটে বড় ধরনের বিভাজন চোখে পড়তে শুরু করেছে। দুই লিঙ্গায়েত নেতাই বিজেপিকে ধাক্কা দিতে সর্বশক্তি দিয়ে নেমেছেন। ফলে লিঙ্গায়েতদের একটি বড় মাপের ভোট এ বার কংগ্রেসের ঘরে যেতে পারে। পাল্টা কৌশলে মেরুকরণের তাস খেলার ইঙ্গিত দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি কর্নাটকে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ ছেঁটে দিয়ে তা সমভাগে বণ্টন করে দেওয়া হয়ে ভোক্কালিগা ও লিঙ্গায়েতদের মধ্যে। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, তাঁরা ক্ষমতায় এলে মুসলিমদের সেই সংরক্ষণ ফিরিয়ে দেবেন। যা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছেন অমিত শাহ। তিনি জানতে চান, “কাদের সংরক্ষণ কমিয়ে মুসলিমদের সংরক্ষণ দেবে কংগ্রেস?” দুই হিন্দু জনগোষ্ঠীকে অমিত শাহ পরোক্ষে বোঝাতে চেয়েছেন কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে আখেরে সংরক্ষণ হারাতে হবে ভোক্কালিগা ও লিঙ্গায়েতদের।
বিক্ষুব্ধ কাঁটা, লিঙ্গায়েত ভোট বিভাজনের আশঙ্কার সঙ্গেই বাসবরাজ বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে গত দু’-আড়াই বছরে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বি এস ইয়েদুরাপ্পার ইস্তফার পরে দু’বছরের কিছু বেশি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বাসবরাজ বোম্মাই। কিন্তু তাঁর আমলে দুর্নীতি চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ। সরকারি কাজে ‘৪০ শতাংশ কমিশন’ দাবি করার অভিযোগ ওঠে এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘুষের চক্করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন এক ঠিকাদার। তাই এ বারে একাধিক জনসভা থেকে ‘বিজেপির সরকার ৪০ শতাংশ কমিশনখোর’ শব্দবন্ধটি দফায় দফায় ব্যবহার করছেন রাহুল গান্ধী ও তাঁর দল। আজ রাহুল বলেন, “৪০ শতাংশ কমিশন নেয় এমন লোকেদের সঙ্গে মঞ্চে বসতে প্রধানমন্ত্রীর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু রাজ্যের ঠিকাদার সংগঠন ৪০ শতাংশ কমিশনখোরদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলে, তার প্রাপ্তিস্বীকার করা হয় না, উত্তর তো দূরের কথা। এর থেকেই বোঝা যায় প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির পক্ষে।”
এ যাবত এ প্রসঙ্গে নীরব থেকেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু আজ অমিত শাহ বলেন, “দুর্নীতির কোনও প্রমাণ কংগ্রেসের হাতে থাকলে তাঁদের উচিত আদালতে যাওয়া। কেন না কোথাও কোনও অভিযোগ নেই, লোকে বিশ্বাস করবে কী করে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy