ছবি: পিটিআই।
ভোটার কার্ড থাকা মানেই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর মতে, একমাত্র নাগরিক পঞ্জিতে (এনআরসি) নাম থাকলে তবেই প্রমাণিত হবে, কোনও ব্যক্তি ভারতের নাগরিক এবং সেই কারণেই গোটা দেশে দ্রুত এনআরসি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। অমিতের এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে সর্বস্তরে। বিরোধীদের প্রশ্ন, এত দিন ধরে যাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এলেন, তাঁরা যদি নাগরিক না-হন, তা হলে কারা এ দেশের নাগরিক?
অসমের এনআরসি-র ধাঁচে গোটা দেশে নাগরিক পঞ্জি তৈরি করা হবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে সেই কাজ সেরে ফেলা হবে বলে দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন অমিত। তবে আজ একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে এনআরসি তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কোনও দিন ঠিক হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। এর পরেই সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, দেশের বড় সংখ্যক মানুষের কাছেই আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড রয়েছে। সেগুলি কি নাগরিকত্ব নির্ধারণে যথেষ্ট নয়? এর জবাবেই বোমা ফাটান অমিত। তিনি বলেন, ‘‘না। ওই কার্ডগুলি নাগরিকত্ব প্রমাণ করে না। আধার তো নয়ই। কারণ আধার কার্ডের অন্য একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। সেই জন্যই এনআরসি বানানোর দরকার রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: এনআরসি-সিএএ প্রয়োগে বাধা দিতে পারেন না মমতা, দাবি অমিতের
তা হলে কী ভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণ হবে? স্বরাষ্ট্র সূত্র বলছে, অসম মডেলে ঠিক হয়েছিল বাসিন্দাদের ভোটার কার্ড থাকতে হবে। সঙ্গে ভিত্তি-তারিখ ধরা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে যে-সব পরিবারের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে এবং যাঁদের সচিত্র ভোটার কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে, তাঁদের নাম নাগরিক পঞ্জিতে উঠবে বলে স্থির হয়েছিল। আজ অমিত যে-ভাবে ভোটার কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় বলে দাবি করলেন, তার পরে গোটা দেশের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কী হবে, তা নিয়ে নতুন করে ধোঁয়াশা তৈরি হয়ে গেল। মন্ত্রকের সূত্র অবশ্য বলছে, অসমের মতোই গোটা দেশের ক্ষেত্রেও এমন একটি দিনকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত কী নিয়মবিধি ঠিক হবে, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে মন্ত্রক। তবে অমিতের আশ্বাস, ‘‘যারা এই দেশের নাগরিক, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে ভারতীয় মুসলিমদের তো নয়ই।’’
প্রশ্ন: আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড রয়েছে। সেগুলি কি নাগরিকত্ব নির্ধারণে যথেষ্ট নয়?
অমিত: না। ওই কার্ডগুলি নাগরিকত্ব নির্ধারণ করে না। আধার তো নয়ই। কারণ আধার কার্ডের অন্য একটি উদ্দেশ্য রয়েছে।
এনআরসি-র প্রয়োজন ব্যাখ্যা করে অমিত বলেন, ‘‘দেশের নাগরিকদের তালিকা তৈরি করতেই এনআরসি-র সিদ্ধান্ত। যে তালিকায় সব বৈধ নাগরিকদের নাম থাকবে।’’ বিরোধীদের আপত্তির প্রশ্নে শাহের জবাব, ‘‘বিরোধীরা দেখাক, এমন কোন দেশ রয়েছে যেখানে নাগরিক-তালিকা নেই। সব অনুপ্রবেশকারীকে নাগরিকত্ব দেওয়া সম্ভব নয়।’’
কিন্তু অমিতের বক্তব্যে সাধারণ মানুষের আরও আতঙ্ক বাড়বে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘একেই নাগরিকত্ব আইন ঘিরে মানুষ আতঙ্কে। এর পর তো নাগরিকত্ব প্রমাণে দেশবাসীকে রুটি-রুজি ছেড়ে ছুটে বেড়াতে হবে।’’ তাঁর দাবি, অসমে এনআরসি-র আতঙ্কে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। গোটা দেশে এনআরসি হলে মৃত্যুমিছিল শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy