(বাঁ দিকে) অমিত শাহ ও রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এত দিন রাহুল গান্ধীর জাতিগণনার দাবির মুখে নীরব থাকার নীতি নিলেও বিজেপি এ বার মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে জিতে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার নীতি নিল। লোকসভার নরেন্দ্র মোদীর পরে এ বার রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছরের যাত্রা নিয়ে আলোচনায় অমিত শাহ সরাসরি অভিযোগ তুললেন, কংগ্রেস সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিয়ে মুসলিমদের ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দিতে চাইছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির জাতিগণনার দাবি তুলেছে। এত দিন মোদী সরকার তথা বিজেপি নীরব ছিল। শুধু লোকসভা নির্বাচনের সময় মোদী অভিযোগ তুলেছিলেন, কংগ্রেস হিন্দুদের মঙ্গলসূত্র, সম্পত্তি ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু তাতে রাজনৈতিক লাভ হয়নি। রাহুল সংবিধান হাতে নিয়ে মোদী সরকার চারশো আসনে জিতে সংবিধান বদলাতে চাইছে অভিযোগ তোলায় দলিতদের ভোটও বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়েছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্রের ভোটে আর এই কৌশল কাজ করেনি বলে বিজেপির মত। তার পরেও রাহুল সংসদে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ওবিসি-দের জনসংখ্যার ভাগ অনুযায়ী সংরক্ষণ দেওয়া হবে। তার জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হবে।
আজ রাজ্যসভায় শাহের অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেস আসলে মুসলিমদের ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দিতে চাইছে। কংগ্রেস এই মুসলিম তোষণের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করেনি। আমরা উত্তরাখণ্ডে মডেল আইন এনেছি। একে এক সব রাজ্যে বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে।’’ লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ হবে না। শাহ বলেন, কংগ্রেস এখন ওবিসি সংরক্ষণের কথা বলছে। কিন্তু এই কংগ্রেস সরকারই কাকা কালেলকর কমিটি, মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট হিমঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। রাজ্যসভায় প্রথমে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা, তার পরে শাহ অভিযোগ তুলেছেন, মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ করে ওবিসিদের সংরক্ষণের ব্যবস্থার সময় রাজীব গান্ধী এর বিরোধিতা করেছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধন করে অনগ্রসর কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিয়েছে। গরিব বা আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষের জন্য ১০ শতাংশ বাড়তি সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে। ওবিসি চিহ্নিত করার ক্ষমতা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে। নাম না করে রাহুলকে নিশানা করে শাহ বলেন, ‘‘একজন চুয়ান্ন বছর বয়সে নিজেকে যুবক বলেন। তিনি হাতে সংবিধান নিয়ে নাড়াচ্ছেন ভোটের জন্য। সংবিধান ভোট পাওয়ার হাতিয়ার নয়।’’
রাহুল লোকসভায় দাঁড়িয়ে বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে বিজেপি-আরএসএসের ‘সুপ্রিম লিডার’ তকমা দিয়ে বলেছিলেন, সাভারকর সংবিধানের বিরোধী ছিলেন। শাহ তার জবাবে বলেন, বীর সাভারকরের এক জীবনে দু’বার যাবজ্জীবন হয়েছিল। তাঁর মতো সাহসী দেখা যায় না। বিজেপির বাকি নেতাদের মতো শাহও জওহরলাল নেহরু-ইন্দিরা গান্ধীকে সংবিধানের সংশোধন, জরুরি অবস্থা নিয়ে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তার জবাবে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ বলেছেন, বিজেপির ‘এক বক্তৃতা, অনেক বক্তা’ নীতিতে লোকসভায় যা বলা হয়েছিল, রাজ্যসভাতেও সেই একই বক্তৃতা
হল। শাহ বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার কথা প্রতিটি শিশুকে মুখস্থ করিয়ে দিতে হবে, যাতে আর কেউ তার
সাহস না পায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy