অমিত শাহ এবং অখিলেশ যাদব। ফাইল চিত্র।
গত দুই লোকসভার মতো ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে আজমগঢ়। ওই এলাকায় দশটি আসনের মধ্যে মাত্র একটি বিধানসভায় জিতেছিল বিজেপি। ছবিটি পাল্টাতে আজমগঢ়ে গেরুয়া প্রার্থীদের জয়ে মেরুকরণকেই হাতিয়ার করলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। সমালোচনা করলেন সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদবের মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী ও জহওরলাল নেহরুকে একাসনে বসানোর। অন্য দিকে আজমগঢ়ের তুলনা করলেন সন্ত্রাসের গড়ের সঙ্গে। আর যোগী আদিত্যনাথ প্রস্তাব দিলেন আজমগঢ়ের নাম পাল্টে আর্যমগঢ় করার। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের চার মাস আগে থেকেই ধর্মীয় মেরুকরণকে উস্কে দিয়ে হিন্দুত্বের মঞ্চে সমস্ত জাতি ও সম্প্রদায়কে নিয়ে আসার কৌশলকে সঙ্গী করে প্রচারে নেমে পড়লেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
ভোট প্রচারে গত কালই বারাণসী পৌঁছন অমিত শাহ। আজ সকালে হিন্দির উপরে একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরে দুপুরে আজমগঢ় পৌঁছন অমিত শাহ-আদিত্যনাথ। সেখানে মা সরস্বতী ধাম রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন তিনি। তারপর ওই মঞ্চ থেকেই ভোট বিভাজনের লক্ষ্যে মেরুকরণের কৌশলকেই হাতিয়ার করেন। আজমগঢ় বরাবরই সমাজবাদী পার্টির ঘাঁটি বলে পরিচিত। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের লোকসভা সাংসদ হলেন সপা নেতা অখিলেশ যাদব। সম্প্রতি পাকিস্তানের জনক মহম্মদ আলি জিন্নাকে গাঁধী, নেহরুর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন অখিলেশ। আজ সেই সূত্র ধরেই অখিলেশকে আক্রমণ শানান শাহ। রাজনীতিকদের মতে, ধর্মীয় ওই সুড়সুড়ির লক্ষ্য হল হিন্দু ভোটের মেরুকরণ। শাহ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের ভোটে সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেতেই জিন্নার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন অখিলেশ। তিনি জিন্নার মধ্যে মহৎ গুণাবলী খুঁজে পেয়েছিলেন। জিন্নার মধ্যে মহৎ গুণাবলী খুঁজে পাওয়া আসলে সংখ্যালঘুদের একটি অংশকে তোষণ করার রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।’’
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই উত্তরপ্রদেশে জেতার লক্ষ্যে হিন্দু ভোটকে এক জোট করার লক্ষ্যে মেরুকরণকেই হাতিয়ার করে এসেছে বিজেপি। কিন্তু এ বারের ছবিটি বেশ অনেকটাই আলাদা। যে হিন্দু সমাজ ২০১৯ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে এককাট্টা হয়ে বিজেপির সমর্থনে ভোট দিয়েছে সেই ব্রাহ্মণ-দলিত সমাজের বড় অংশ বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। যাদের সমর্থন না পেলে বিজেপির পক্ষে উত্তরপ্রদেশ জেতা বেশ কঠিন। আর তা বুঝেই উন্নয়নের চেয়ে মেরুকরণেই ভরসা রাখতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। তাই আজ মোগলসরাই, ইলাহাবাদের পরে এবার আজমগঢ়ের নাম পাল্টে আর্যমগঢ় করার প্রস্তাব দিয়েছেন যোগী। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আজমগঢ়-কে আর্যমগঢ় করার মাধ্যমে রাজ্যের হিন্দু সমাজকে বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
উত্তরপ্রদেশ রাজনীতির অন্যতম বিতর্কিত চরিত্র তথা বাহুবলী নেতা আজম খান ও মুক্তার আনসারির গড় বলেও পরিচিত আজমগঢ়। ওই দুই নেতাই উত্তরপ্রদেশ রাজনীতিতে সপা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। আজ অখিলেশের জিন্না-আজম –মুক্তার আনসারি (জেএএম) আঁতাতের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের জনধন-আধার-মোবাইল (জেএএম)-নীতির সঙ্গে তুলনা করে শাহের প্রশ্ন, আজমগঢ়ের মানুষকে বেছে নিতে হবে তাঁরা কোন জেএএম-কে বেছে নিতে চান। অন্য দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহ একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে আজমগঢ়ের সম্পর্ককে উস্কে দিতে ভোলেননি। শাহের কথায়, ‘‘দেশ-বিরোধী কার্যকলাপের ডেরা ছিল এই এলাকা। কিন্তু মা সরস্বতী বিশ্ববিদ্যালয় ছবি পাল্টে দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy