ফাইল চিত্র।
সকালে অমিত শাহের প্রতিশ্রুতি বিনা মূল্যে গ্যাস সিলিন্ডারের। আর বিকেলে সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব জানাচ্ছেন, পাঁচ বছর রাজ্যের মানুষের জন্য চাল-ডাল এক্কেবারে ফ্রি। সঙ্গে থাকবে ঘি-ও। যা দেখে অনেকেরই কটাক্ষ, চাল,ডাল, ঘি আর আগুনও যখন চলে আসছে, তখন প্রতিশ্রুতির বন্যায় এ বার ‘খেয়ালি পোলাও’ রেঁধেই ফেলবেন উত্তরপ্রদেশের মানুষ। আর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, প্রতিশ্রুতির আড়ম্বর সরিয়ে যদি বাস্তবটি দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে অপুষ্টির দিক থেকে বিশ্বের ক্ষুধা সূচকে ২০২০ সালে ১১৬টি দেশের মধ্যে ১০১তম স্থানে রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ভারত। আর দেশের মধ্যে অন্যতম পিছিয়ে পড়া ও ক্ষুধার প্রশ্নে একেবারে পিছনের সারিতে থাকা রাজ্য হল ‘ডাবল ইঞ্জিনে’র উত্তরপ্রদেশ।
এ বারের ভোটে বিজেপি বছরে দু’বার (হোলি ও দীপাবলির) সময়ে রাজ্যের পরিবারপিছু গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে আজ উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে অমিত শাহ বলেন, ‘‘১০ মার্চ ভোটের ফল। আর ১৮ মার্চ হোলি। বিজেপি জিতলেই রান্নার জন্য বিনা মূল্যে সিলিন্ডার পৌঁছে যাবে আপনার বাড়িতে।’’ বিজেপি যেখানে সিলিন্ডারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তখন অখিলেশ আজ রায়বরেলীতে বলেন, ‘‘এসপি জিতলে রাজ্যের সমস্ত গরিব মানুষ আগামী পাঁচ বছর বিনা মূল্যে রেশন পাবেন।’’ বর্তমানে কেন্দ্র থেকে কোভিড অতিমারির কারণে গরিবদের খাদ্যশস্য বণ্টন করা হচ্ছে। যা ভোট শেষ হলেই সরকার বন্ধ করে দেবে বলে আজ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অখিলেশ। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রকল্প নভেম্বর মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। নিতান্তই ভোট এসে যাওয়ায় তা মার্চ মাস পর্যন্ত টানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভোটে যে ফলাফলই হোক না কেন মার্চের পর থেকে আর বিনা মূল্যে খাদ্যশস্য দেবে না কেন্দ্র। তাই আমরা ক্ষমতায় এলে গরিবদের জন্য তা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
এখানেই না থেমে অপুষ্টি আটকাতে পরিবারপিছু এক কিলোগ্রাম করে ঘি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অখিলেশ। তাঁর কথায়, ‘‘মুখের স্বাদ বদলাতে ও অপুষ্টির সঙ্গে লড়তে ঘি-ও দেবে সরকার।’’ কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে নিম্ন মানের খাদ্যশস্য পাঠায় বলে অভিযোগ রয়েছে আমজনতার। তাই উত্তরপ্রদেশের জনতাকে উন্নত মানের খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে বলে দাবি করেছেন অখিলেশ।
আমজনতার খাদ্যের অভাব দূর করতে প্রচেষ্টার অন্ত নেই শাসক-বিরোধী কোনও পক্ষেরই। কিন্তু গত নভেম্বরে করা নীতি আয়োগের ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পর্ভাটি ইন্ডেক্স’ অনুযায়ী দেশের যে রাজ্যগুলি ভীষণ গরিব তার মধ্যে অন্যতম হল উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যের ৩৭.৯ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। তেমনই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক গত বছরের শেষে তথ্যের অধিকার আইনে পেশ করা আর্জির জবাবে জানায়, এ দেশের প্রায় ৩৩ লক্ষ শি্শু অপুষ্টিতে ভুগছে। যার মধ্যে কেবল উত্তরপ্রদেশে রয়েছে দুই লক্ষের কাছাকাছি শিশু। কোভিড কালে এ ধরনের অপুষ্টিজনিত সমস্যা আরও তীব্র আকার নিয়েছে বলেই মত শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy