স্থান আর নামে অমিল রয়েছে। কিন্তু মিলও বড় কম নয়। তাঁর দু’জনেই নাথ যোগী সম্প্রদায়ের। ধর্মগুরুর সংস্পর্শে এসেই বিজেপির রাজনীতিতে হাতেখড়ি। দু’জনেই লোকসভার সাংসদ হওয়ার পরে পা রেখেছেন পরিষদীয় রাজনীতির ময়দানে। প্রথম জন, যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা গোরক্ষপুরের প্রাক্তন সাংসদ। দ্বিতীয় জন, মহন্ত বালকনাথ যোগী। রাজস্থানের অলওয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা অলওয়ার জেলার তিজারা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী।
এ বারের রাজস্থানের বিধানসভা ভোটে সাত জন সাংসদকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এই তালিকায় রয়েছেন, অলিম্পিক পদকজয়ী প্রাক্তন শুটার তথা জয়পুর গ্রামীণ কেন্দ্রের সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌর। জয়পুরেরই জোটওয়ারা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ছেন তিনি। জয়পুরের বিদ্যাধরনগর থেকে লড়ছেন রাজপরিবারের কন্যা তথা রাজসমন্দের সাংসদ দিয়া কুমারি। ঝুনঝুনুর সাংসদ নরেন্দ্র কুমার (মান্ডওয়া), জালোরের বিজেপি সাংসদ দেবজী পটেলের (সাঞ্চোরে), অজমেরের ভগীরথ চৌধুরির (কিসানগড়) পাশাপাশি বালকনাথকে প্রার্থী করা হয়েছে অলওয়ার জেলার তিজারা থেকে।
আরও পড়ুন:
এ ছাড়া প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রবীণ রাজ্যসভা সাংসদ কিরোরীলাল মিনাকে প্রার্থী করা হয়েছে সওয়াই মাধোপুর কেন্দ্রে। বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করা হলেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে এখন বিজেপির অন্দরে কোণঠাসা। তাঁর অনুগামীদের কেউ টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে লড়ছেন। কেউ বা রাজনীতি ছাড়ার বার্তা দিয়েছেন। রাজস্থান রাজনীতিতে দীর্ঘ দিন ধরেই পাঁচ বছর অন্তর পালাবদলের দস্তুর। এই পরিস্থিতিতে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আলোচনায় উঠে আসছে বেশ কয়েকটি নাম।
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক ভাবে জল্পনা ছিল, বসুন্ধরার ‘কট্টর বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের হাতে জয়পুরের কুর্সি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু গজেন্দ্র বিধানসভা ভোটে লড়ছেন না। সম্প্রতি গজেন্দ্র নিজেও জানিয়েছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই। তা ছাড়া, গজেন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী হলে বসুন্ধরা শিবির বিদ্রোহ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে ভারসাম্য বজায় রাখতে রাজ্যবর্ধন বা বালকনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। যোগীর মতো বিস্ত রাজপুত নন, বালকনাথ অনগ্রসর (ওবিসি) যাদব জনগোষ্ঠীর। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে রাজপুতদের পাশাপাশি ওবিসি ভোটের একাংশও লোকসভায় বিজেপির ঝুলিতে যাবে বলে মনে করছে দলের একাংশ।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, গোরক্ষনাথ মঠের প্রয়াত পীঠাধীশ্বর তথা গোরক্ষপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ মহন্ত অবৈদ্যনাথ রাজনীতিতে এনেছিলেন যোগী আদিত্যনাথকে। বালকনাথের রাজনৈতিক গুরু প্রয়াত মহন্ত চন্দ্রনাথ ছিলেন অলওয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা বাবা মন্তনাথ মঠের পীঠাধীশ্বর। ২০১৬ সালে মঠের মহাসম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ভাবে বালকনাথকে নিজের উত্তরসূরি মনোনীত করেছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ স্বয়ং!