শাসকদল বিজেপির কারচুপি এবং নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ত্রিপুরায় ধনপুর এবং বক্সনগর বিধানসভা উপনির্বাচনের গণনা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল বামেরা। সে রাজ্যের বামফ্রন্ট নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের ফলে শুক্রবার দুই বিধানসভা আসনের গণনায় প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থী বা তাঁদের এজেন্টদের দেখা যাবে না। এর ফলে শাসকদল বিজেপির জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
মঙ্গলবার সিপাহিজলা জেলার দুই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রায় সাড়ে ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। বিরোধী বাম এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, নির্বাচনে শাসকদল বিজেপি সন্ত্রাস এবং কারচুপি করেছে। বহু বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর বলেন, ‘‘আমরা ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই কারচুপি এবং সন্ত্রাস নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, বড় আকারের কারচুপি প্রতিরোধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ তিনি জানান, বামফ্রন্ট উপনির্বাচন বাতিল এবং নতুন করে ভোটগ্রহণের আবেদন জানালেও নির্বাচন কমিশন তা খারিজ করে দেওয়ায় তাঁরা গণনা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ায় ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটে ধনপুর থেকে জিতেছিলেন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। জেতার পর তিনি দলের নির্দেশে সাংসদ পদটি রেখে দিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। অন্য দিকে, বক্সনগর কেন্দ্রটি ওই ভোটে ছিল সিপিএমের দখলে। সেখানকার বিধায়ক সামসুল হকের মৃত্যু হয় কয়েক মাস আগে। ফলে জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট হয়েছিল। মোট ৬০টি আসনের মধ্যে বিজেপি-আইপিএফটি জোট জেতে ৩৩ আসনে। বাম-কংগ্রেস মিলে পায় ১৪টি আসন। আলাদা লড়ে তিপ্রা মথা ১৩টি আসনে জয়ী হয়।
আরও পড়ুন:
বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের জোট হলেও তিপ্রা পৃথক ভাবে লড়েছিল। তাতে তারা ১৩টি আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে আরও একটি বিষয় দেখা গিয়েছিল— ত্রিপুরায় অন্তত ১৯টি আসনে বিরোধী ভোট কেটে বিজেপির জয় কার্যত নিশ্চিত করে দিয়েছিল তিপ্রা। তবে উপনির্বাচনে তিপ্রা ঠিক করে, তারা প্রার্থী দেবে না। সিপিএমকেই সমর্থন করবে। কংগ্রেসও সমর্থন করে বামেদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সমর্থন সিপিএমের কাজে এল না বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান।