Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সমন্বয় কোথায়, প্রশ্ন মাওবাদী হানার পরে

দন্তেওয়াড়ার যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেখানে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করতে সক্রিয় ছিল মাওবাদীরা। চলতি সপ্তাহেই যে ওই এলাকায় হামলা হতে পারে— সে বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য ছিল স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।

ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়ায় মাওবাদীদের ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে নিহত সাত পুলিশকর্মী। ফাইল চিত্র।

ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়ায় মাওবাদীদের ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে নিহত সাত পুলিশকর্মী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০৪:০৭
Share: Save:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের ছত্তীসগঢ় সফরের সময়ে মাওবাদী হামলা হতে পারে। রাজ্য প্রশাসনের হাতে এমন তথ্য থাকলেও দন্তেওয়াড়ার বিস্ফোরণ আটকানো যায়নি। মাওবাদী হামলায় গত কাল প্রাণ গিয়েছে সাত পুলিশকর্মীর। তার পরেই এখন নিরাপত্তাবাহিনীর সমন্বয়ের অভাবের দিকটি সামনে এসে পড়েছে। হামলা কেন রোখা গেল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে।

দন্তেওয়াড়ার যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেখানে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করতে সক্রিয় ছিল মাওবাদীরা। চলতি সপ্তাহেই যে ওই এলাকায় হামলা হতে পারে— সে বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য ছিল স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। তবে হামলার এক দিন আগেই মাওবাদীদের জনা কুড়ির একটি দল দন্তেওয়াড়ার ওই এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে বলে তথ্য এলেও প্রশাসন সক্রিয় হয়নি। হামলা চালাতে সফল হয়েছে মাওবাদীরা। উপদ্রুত এলাকাগুলিতে সামান্য সন্দেহ হলেই পথে থাকা কালভার্টগুলি ভাল ভাবে পরীক্ষা করে গাড়ি চালানোর নিয়ম। কিন্তু সময় বাঁচাতে কিংবা বাহিনীর ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে অধিকাংশ সময়েই সেই নিয়ম মানা হয় না। দন্তেওয়াড়ায় সেই নিয়ম মানা হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, মাওবাদীরা এলাকায় বসে থাকলেও, হামলা আটকাতে নিরাপত্তাবাহিনীর সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর তালিকায় বিরক্ত কেন্দ্র, এ বার দেশিকোত্তম পাচ্ছেন না কেউই

বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ছত্তীসগঢ়ে কয়েকটি বড় মাওবাদী হামলা হলেও, আজ সে রাজ্যে দাঁড়িয়ে রাজনাথ সিংহ দাবি করেন, ‘‘মাওবাদী ও উগ্রপন্থীরা দ্রুত জমি হারাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। কয়েক বছরে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ জমি হারিয়েছে মাওবাদীরা। আজ ছত্তীসগঢ়ে রাজনাথের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করে সিআরপি-র ‘বস্তারিয়া ব্যাটেলিয়ন’। স্থানীয় জনজাতি যুবক-যুবতীদের নিয়ে ব্যাটেলিয়নটি গড়া হয়ছে। নাম রাখা হয়েছে বস্তার এলাকার সাযুজ্যে। ৫৩৪ জনের ব্যাটেলিয়নের ৩৩ শতাংশ মহিলা। ওই যুবক-যুবতীদের জঙ্গলযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, সবরকম অস্ত্রের ব্যবহার, আইডি বিস্ফোরক চিনে নিয়ে সেগুলি নিষ্ক্রিয় করা, মানচিত্র সঠিক ভাবে বোঝা, স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ করার মতো বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে।

মাওবাদী দমনে স্থানীয় যুবকদের আধাসেনাতে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, মাওবাদী হানায় ‘বস্তারিয়া ব্যাটেলিয়ন’-এর কেউ মারা গেলে আঙুল উঠবে মাওবাদীদের দিকে। তাতে স্থানীয়দের মধ্যে মাওবাদীদের জনসমর্থনে ধস নামবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র। দ্বিতীয়ত, জনজাতিদের সঙ্গে স্থানীয় ভাষায় যোগাযোগ গড়ে উঠলে, ভুল বোঝাবুঝি কমবে। তৃতীয়ত, স্থানীয়দের চাকরি হলে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। যুবকরা উৎসাহিত হবেন আধাসেনায় যোগ দিতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE