আদালতে স্বামী দাবি করেন, স্ত্রী তাঁর সঙ্গে কখনও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাননি। কারণ ছাড়াই তিনি বরাবর এই সম্পর্ক অস্বীকার করে এসেছেন। —প্রতীকী চিত্র।
সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনও স্বামী বা স্ত্রী যদি তাঁর সঙ্গীকে দীর্ঘ সময় ধরে যৌন মিলনের অনুমতি না দেন, তবে তা এক রকম মানসিক নিষ্ঠুরতা। বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত একটির মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ ইলাহাবাদ হাই কোর্টের।
সম্প্রতি পরিবার আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন খারিজের পর এক ব্যক্তি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলাকারী জানান, ১৯৭৯ সালে তাঁর বিয়ে হলেও গত ৭ বছর ধরে তাঁরা আলাদা থাকেন। বাদী এবং বিবাদী পক্ষের সওয়াল শোনার পর হাই কোর্ট বলে, রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে ওই দম্পতি দীর্ঘ দিন পৃথক ভাবে থাকছেন। স্ত্রী বৈবাহিক বন্ধনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেননি এবং বৈবাহিক দায়িত্ব-কর্তব্যও পালন করেননি। আদালতের কথায়, ‘‘এটা স্পষ্ট যে, দম্পতির সম্পর্ক পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে।’’
মামলাকারীর স্ত্রী বিয়ের পর কয়েক বছর বাপের বাড়িতেই ছিলেন। অভিযোগ, যখন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি একসঙ্গে থাকা শুরু করেন, তখন তিনি বৈবাহিক জীবনের বাধ্যবাধকতা, দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেননি। আদালতে স্বামী এ-ও দাবি করেন, স্ত্রী তাঁর সঙ্গে কখনও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাননি। কোনও কারণ ছাড়াই তিনি বরাবর এই সম্পর্ক অস্বীকার করে এসেছেন।
আদালত জানতে পারে ১৯৯৪ সালে ওই দম্পতি নিজেদের সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ করেন। তবে সেটা পঞ্চায়েতের সালিশি সভায়। ঠিক হয়, স্ত্রীকে ২২,০০০ টাকা খোরপোশ দিতে হবে স্বামীকে। পরে ওই মহিলা আর এক জনকে বিয়ে করেন। কিন্তু ‘প্রাক্তন’ স্বামী পরে পরিবার আদালতে মামলা করেন। তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ এবং দীর্ঘ সময় একে অন্যের থেকে দূরে থাকার কারণ দর্শিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রির আবেদন করেন। কিন্তু বিভিন্ন সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখার পর পরিবার আদালত তা খারিজ করে দেয়। এর পর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।
ইলাহাবাদ হাই কোর্ট পরিবার আদালতের রায় বাতিল করে মামলাকারীর আবেদন মঞ্জুর করেছেন। বিচারপতি সুনীত কুমার এবং বিচারপতি রাজেন্দ্র কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী যে সব প্রমাণ দেখাচ্ছেন তাতে অবিশ্বাসের কিছু নেই। তাঁর অভিযোগও যুক্তিসঙ্গত। এর পরই আদালত বলে, ‘‘যথেষ্ট কারণ ছাড়া এক জন স্বামী বা স্ত্রী যদি তাঁর জীবনসঙ্গীকে যৌন মিলনে অনুমতি না দেয়, তবে সেটা মানসিক নিষ্ঠুরতার সমান। আবার এই ভাবে এক জন স্ত্রীকে স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে এক ছাদে নীচের থাকতে বাধ্যও করা যায় না।’’ এর পরই বিচ্ছেদের আবেদন গ্রহণ করে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy