গভীর রাত অবধি টানা ‘অপারেশন’ চালিয়ে সিকিমে ১,২৪৭ জন পর্যটককে প্রবল তুষারপাতের হাত থেকে রক্ষা করল সেনাবাহিনী। বুধবার দুপুরের পর থেকে পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু থেকে গ্যাংটক ফেরার পথে রাস্তায় আটকে পড়েন ১,২১৭ জন পর্যটক৷ ৩০ জন পর্যটক আটকে পড়েন উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন এলাকায়। সেনা সূত্রের খবর, শ’চারেক গাড়ি বরফে আটকে যায়। সেগুলি কিছুক্ষণের মধ্যে বরফের চাদরে ঢাকা পড়তে শুরু করে৷ বিপদ আঁচ করে পর্যটকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে জওয়ানেরা ‘ট্রানজ়িট ক্যাম্প’-এ নিয়ে যান।
পর্যটকদের সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করা হয় এবং খাবার খাওয়ানো হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে পর্যটকদের গ্যাংটক পাঠানো শুরু হয় সিকিম প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে। গাড়িগুলিকে পরে উদ্ধার করে গ্যাংটকে পাঠানো হয়। সেনাবাহিনীর সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৩ কোরের মুখপাত্র অঞ্জনকুমার বসুমাতারি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘জওয়ানেরা কনকনে ঠান্ডা ও তুষারপাতের মধ্যেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে সবাইকে উদ্ধার করেছেন। পর্যটকেরা সবাই ঠিক আছেন। বুধবার রাতে আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে ক্যাম্পেই সকলকে রাখা হয়েছিল।’’
তবে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব বৃহস্পতিবার থেকে কমতে শুরু করেছে দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমের পাহাড়ে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ, শুক্রবার থেকে পাহাড়ে আবহাওয়া মোটামুটি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। পাহাড় এবং পাদদেশে রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে আগামী কয়েক দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় কয়েকটি জায়গা ছাড়া, তুষারপাত তেমন হয়নি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত অধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘ঝঞ্ঝার প্রভাব কাটতে শুরু করেছে। তবে সমতলে কুয়াশার দাপট কয়েক দিন থাকবে।’’ বৃহস্পতিবার সন্ধের পর থেকেই উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় কুয়াশার প্রভাব দেখা যায় বলে খবর।
গত কয়েক দিন ধরে সিকিমে বিভিন্ন প্রান্তে তুষারপাত শুরু হয়েছে। উত্তর সিকিমের লাচুং এবং লাচেনে দিনভর বরফ পড়েছে। রাবাংলায় বরফের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও হচ্ছে। পেলিংয়ে প্রথমে শিলাবৃষ্টি, পরে বরফ পড়ে। পূর্ব সিকিমের জুলুক, নাথু লা, ছাঙ্গু বা নাথাং ভ্যালিতে টানা বরফ পড়েছে। সিকিম প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখেই ঘোরার নির্দেশ হয়েছে। ঠান্ডা বাড়ছে দার্জিলিং ও কালিম্পঙেও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)