ফাইল চিত্র।
একে ঘাড়ের উপরে বিপুল ঋণের বোঝা। তার উপরে কোভিডের ধাক্কায় বিপর্যস্ত বিশ্বের অধিকাংশ বিমান পরিবহণ সংস্থা। এই অবস্থায় দীর্ঘদিন আর্থিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা বেচে কেন্দ্রের মোটা টাকা ঘরে তোলা এমনিতেই কার্যত কষ্টকল্পনা। কিন্তু তার পরেও দাম যেটুকু উঠত, তা-ও ক্রমাগত কমার জোগাড় গত কয়েক মাসে একের পর এক বিমান বসে যাওয়ায়।
কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এয়ার ইন্ডিয়া কেনার বিষয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে ‘জোর কদমে ঝাঁপানো’ টাটা গোষ্ঠী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শহরে ঘুরে এয়ার ইন্ডিয়ার সম্পত্তির সম্ভাব্য মূল্য হিসেব করতে শুরু করেছেন ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা। তখনই দেখা গিয়েছে, দিল্লি-মুম্বই-বেঙ্গালুরু-কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরে বসে রয়েছে বহু বিমান (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে)। টাটা গোষ্ঠীর এক কর্তার কথায়, নিয়মিত উড়ানে শামিল বিমান আর খারাপ হয়ে বসে যাওয়া বিমানের দামের ফারাক কয়েক কোটি টাকা। ফলে হাতবদলের ‘কথা শুরুর সময়ে’ প্রাথমিক ভাবে যে দামের কথা ভাবা হয়েছিল, বাস্তবে দর তার তুলনায় অনেকটাই কমে যেতে পারে।
একে লোকসানে চলা এয়ার ইন্ডিয়ার বাজারে ধার ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার উপরে অতিমারির ধাক্কা সামলে বিমানে যাত্রী সংখ্যা কবে ফের মুখ তুলবে, তা ঘিরে ঘোর অনিশ্চয়তা। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে হাতে নিতে টাটাদের এত আগ্রহের অন্যতম কারণ সম্ভবত ‘ইতিহাস’। ১৯৩২ সালের অক্টোবরে টাটা গোষ্ঠীর প্রয়াত কর্ণধার জে আর ডি টাটার হাত ধরে করাচি-মুম্বই উড়ান দিয়ে যে টাটা এয়ারের সূচনা হয়েছিল, ১৯৪৬ সালে তারই নাম পাল্টে হয় এয়ার ইন্ডিয়া। স্বাধীনতার পরে তা অধিগ্রহণ করে কেন্দ্র। ১৯৪৭ সালে ৪৯% শেয়ার কেনার পরে ১৯৫৩ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার পুরো নিয়ন্ত্রণই হাতে নিয়ে নেয় তৎকালীন সরকার। অনেকে বলেন, ‘জোর করে’ সেই অধিগ্রহণ আজও মানতে পারেননি টাটারা।
শিল্পমহলের একাংশের মতে, টাটা গোষ্ঠী মনে করে, তারা এয়ার ইন্ডিয়া কিনলে, সেটি হবে ওই সংস্থার ঘরে ফেরা। শুধু তা-ই নয়। জে আর ডি-র মতো টাটা গোষ্ঠীর এমেরিটাস চেয়ারম্যান রতন টাটারও অন্যতম ‘প্যাশন’ বিমানের ককপিট। কর্পোরেট দুনিয়ায় অনেকে বলেন, এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতি তাঁর ‘দুর্বলতা’ সর্বজনবিদিত। আর সেই কারণেই টাটাদের ঝুলিতে দুই বিমান পরিবহণ সংস্থা বিস্তারা ও এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার মালিকানা থাকা সত্ত্বেও এয়ার ইন্ডিয়ার সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে নাম ভেসে উঠছে তাদের।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যৌথ ভাবে বিস্তারা চালু করেছে টাটারা। আর এয়ার এশিয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। এই দুই সংস্থায় তাদের অংশীদারি যথাক্রমে ৫১ ও ৮৩ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি হাতে এলে তাদের আন্তর্জাতিক ও দেশীয় উড়ান টাটারা কী ভাবে নিজেদের দুই সংস্থার কার্যকলাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াবে, সে দিকেও আগ্রহী চোখ অনেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy