নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় রেল। দেশের নানা প্রান্তে একাধিক স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, ভিড় সামলানোর একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেগুলির বাস্তবায়ন এখনও বাকি। ব্যবহার করা হতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)- ও। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নয়াদিল্লি-সহ দেশের মোট ৬০টি জনবহুল স্টেশনকে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে খবর। তবে এখনও স্টেশনের নামের সম্পূর্ণ তালিকা পাওয়া যায়নি।
সূত্রের খবর, স্টেশনে ভিড় বেশি হলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ‘হোল্ডিং জ়োন’ তৈরি করা হবে। সেখানে অতিরিক্ত যাত্রীদের রাখা হতে পারে। এ বিষয়ে স্থানীয় আধিকারিকদের প্রশিক্ষণও দেওয়ার ভাবনা রয়েছে রেলের। আচমকা কোনও কারণে স্টেশনে ভিড় বেশি হয়ে গেলে বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে কী ভাবে তা সামাল দিতে হবে, সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কর্মীদের। স্থানীয় ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিশেষ ‘ক্লাস’ নেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন:
এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের সুবিধার্থে দিকনির্দেশক চিহ্ন বসানো হতে পারে। তা থেকে তাঁরা ধারণা করতে পারবেন, কোন দিকে কী আছে। ‘হোল্ডিং জ়োন’-এর ক্ষেত্রেও এই ধরনের চিহ্ন ব্যবহার করা হতে পারে।
কোনও কারণে ট্রেন দেরি করলে স্টেশনে ভিড় বেড়ে যায়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগতে পারে এআই। ৬০টির মধ্যে প্রয়াগরাজের সঙ্গে যুক্ত অন্তত ৩৫টি স্টেশন রেলের ভাবনার তালিকায় রয়েছে বলে খবর। এই সমস্ত স্টেশনে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। সঙ্গে থাকবে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। স্টেশনগুলিতে ক্যামেরার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হতে পারে। নয়াদিল্লি স্টেশনে ইতিমধ্যে ২০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, স্টেশনের ভারবাহক, হকার, দোকানদার, এমনকি যাত্রীদের কাছ থেকেও পরিষেবা সম্পর্কে মতামত (ফিডব্যাক) জানতে চাইবে রেল। তার ভিত্তিতে পরিষেবা উন্নত করার চেষ্টা করা হবে।
নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের ভিড় অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গিয়েছিল। রাত ১০টা নাগাদ সেখানে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ১৮ জন। অভিযোগ, পর পর দু’টি ট্রেন ‘লেট’ করেছিল। ফলে স্টেশনে ভিড় বেড়ে গিয়েছিল। তৃতীয় ট্রেন আসার ঘোষণা হতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অভিযোগ, ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ট্রেন ১৬ নম্বরে আসবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ট্রেন ধরার হুড়োহুড়িতে অনেকে পড়ে যান। বিপুল ভিড় সামলাতে ব্যর্থ হন কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পর রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার পরেই পরিষেবা উন্নত করতে চাইছে কেন্দ্র।