কৃত্রিম মেধাযুক্ত (এআই) সিসি ক্যামেরা বসতে চলেছে দিল্লির আনাচেকানাচে। বিপদে পড়ে সেই ক্যামেরার দিকে হাত নাড়লেই খবর চলে যাবে পুলিশের কাছে। এর মাধ্যমে রাস্তাঘাটে, বিশেষ করে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা অনেকটা কমবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত এই প্রযুক্তি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন থেকে সমগ্র দিল্লিতে এআই ক্ষমতাসম্পন্ন সিসিটিভি চালু হতে পারে।
দিল্লি পুলিশের ‘নিরাপদ শহর’ প্রকল্পের অন্যতম অঙ্গ এই বিশেষ ধরনের সিসি ক্যামেরা। সাধারণ সিসিটিভির চেয়ে এই ধরনের ক্যামেরার মান অনেক উচ্চ। ফলে রাস্তাঘাটে কী ঘটছে, তা আরও নিখুঁত ও স্পষ্ট ভাবে এই ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এই ধরনের সিসিটিভি ফুটেজ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে রাজধানীর বিভিন্ন থানা, পুলিশের সদর দফতর এবং ডিসিপিদের দফতরে। পুলিশ সূত্রে খবর, ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কেউ হাত নাড়লে থানায় সিসিটিভি স্ক্রিনে লাল আলো জ্বলে উঠবে। সাঙ্কেতিক শব্দও সতর্ক করবে পুলিশ আধিকারিকদের। ফলে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছোতে পারবেন। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সিসিটিভিতে ব্যবহার করা হবে ‘ফেশিয়াল রেকগনিশন’ অর্থাৎ মুখের ছবি দিয়ে চিনতে পারার প্রযুক্তি। তাতে অপরাধীদের শনাক্ত করা তুলনামূলক সহজ হবে। এই ধরনের উদ্যোগ সারা দেশে এই প্রথম বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
এআই-যুক্ত সিসি ক্যামেরাগুলির সঙ্গে একটি করে ‘প্যানিক বাটন’ যোগ করার ভাবনাচিন্তাও চলছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনেকের আপত্তিতে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। কোনও নির্দিষ্ট বোতাম থাকলে তার অপব্যবহারের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পাবে। অনেকে অকারণে সেই বোতামে চাপ দিয়ে পুলিশকে উত্ত্যক্ত করতে পারেন। এই সমস্ত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বোতামের পরিকল্পনা বাতিল করেছে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশের আঞ্চলিক স্তরের কর্তাদের এই ধরনের ক্যামেরা বসানোর জন্য কিছু জায়গা বাছাই করতে বলা হয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় অপরাধের অভিযোগ বেশি, যেখানে নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজন, তেমন জায়গা চিহ্নিত করে ক্যামেরাগুলি বসানো হবে। শহরের প্রতিটি কোনায় এই ক্যামেরা ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে। থানাগুলিতে একটি নতুন সফ্টওয়ারের ব্যবহারও চালু হচ্ছে, যার মাধ্যমে যে কোনও পুরনো, বিকৃত বা মুখঢাকা ছবি থেকে অপরাধীকে শনাক্ত করা যাবে। সিসি ক্যামেরার স্ক্রিনশট থেকেও এই প্রযুক্তিতে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পারবেন তদন্তকারীরা। সমগ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর উদ্বোধন করবেন।