দু’মাসও নেই ভোটের। অথচ টানা ১৫ বছর মহারাষ্ট্রে জোট সরকার চালানোর পর কংগ্রেস এবং এনসিপি এ বার একজোট হয়ে ভোটে লড়বে কি না, সেটাই অনিশ্চিত এখনও। এই অবস্থায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে চলেছেন। সেখানে জোট নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হতে পারে।
মহারাষ্ট্রে দীর্ঘদিন এই দু’দলের জোট সরকার চললেও উভয়ের মধ্যে টানাপড়েনের কাহিনিও নতুন নয়। নিচুতলায় দু’পক্ষের চাপানউতোর এতটাই তিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দু’তরফেই দাবি উঠছে একা লড়ার। যদিও আপাত ভাবে টানাপড়েনের কেন্দ্রে রয়েছে আসন বণ্টনের প্রশ্ন। লোকসভা ভোটে কংগ্রেস এ রাজ্যে মাত্র ২টি আসনে জিতেছে। এনসিপি পেয়েছে ৫টি। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসকে বেকায়দায় দেখেই সুর চড়িয়েছেন এনসিপি-র অজিত পওয়ার, প্রফুল্ল পটেলরা। তাঁদের দাবি, গত বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতার কথা কংগ্রেস ভুলে যাক। এ বার অর্ধেক আসন না ছাড়লে একাই লড়বে এনসিপি।
মহারাষ্ট্রে ২৮৮টি বিধানসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১৭৪টিতে লড়েছিল গত বার। এনসিপি ১১৪টিতে। কংগ্রেস নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণের বক্তব্য, গত বারের চেয়ে বড় জোর দু’-পাঁচটা আসন বেশি ছাড়া যেতে পারে। কিছু আসন পাল্টাপাল্টিও করা যেতে পারে। তা বলে ১৪৪টি আসন ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। এতেই থমকে গিয়েছে জোট নিয়ে আলোচনা। সম্প্রতি সংসদ ভবনে এ নিয়ে সনিয়া-পওয়ার কথা হলেও রাজ্য স্তরে অনমনীয় দু’পক্ষই। দু’দলের সূত্রেই অবশ্য জানা যাচ্ছে, সমস্যাটা আসলে গোটা তিরিশেক আসন বেশি ছাড়া না-ছাড়া নিয়ে নয়।
কংগ্রেসের অনেকে মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী চহ্বাণ ব্যক্তিগত স্বার্থে জোট চাইছেন না। তিন দফা ক্ষমতায় থাকার পরে প্রবল প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার কারণে এ বার জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অথচ জোট বেধে ভোটে লড়লে হারের দায় চাপবে চহ্বাণেরই উপরে। প্রশ্ন উঠবে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে। আর জোট না হলে, সেটাকেই হারের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারবেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ১০ জনপথের ঘনিষ্ঠ এক নেতা আজ জানান, সনিয়া ও রাহুল গাঁধী জোটের পক্ষে। পওয়ার আজ লন্ডন সফর সেরে ফিরেছেন। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন সনিয়া। কংগ্রেস সভানেত্রী চেষ্টা করবেন যাতে জোট টিকিয়ে রাখা যায়। কারণ, সনিয়ার কাছেও এটা পরিষ্কার যে, জোট না হলে মহারাষ্ট্রেও কংগ্রেস প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হতে পারে। প্রশ্ন, কংগ্রেসের এই আশঙ্কার দিকটি পওয়ারেরও অজানা কিছু নয়। শেষ পর্যন্ত তিনি কী অবস্থান নেন, সেটাই প্রশ্ন। কারণ, পওয়ার-অনুগামীরা এটাও ভাবনায় রাখছেন যে, এনসিপি একা লড়লে ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য স্তরে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়া বা অন্য অনেক রাস্তা খোলা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy