উরিতে অতন্দ্র প্রহরা। ছবি: পিটিআই।
উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার জন্য ভারত সরাসরি আঙুল তুলেছে পাকিস্তানের দিকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।’’ সোমবার পাক সংবাদমাধ্যম কিন্তু ইসলামাবাদকে এ ভাবে কাঠগড়ায় তোলার জন্য নয়াদিল্লির তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের বরং দাবি, এই হামলা ভারতেরই সাজানো ঘটনা। যে বিশেষ সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে, তা থেকেই সেটা স্পষ্ট বলে পাক সংবাদপত্রগুলি অভিযোগ করেছে।
ভারতীয় কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং পাক সেনা চাইছে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ুন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। যাতে দেশে তাঁর রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দুর্বল হয়। সেই কারণে বেছে বেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় শরিফের যোগ দেওয়ার আগে এই উরি হামলা ঘটানো হল। যদিও পাক সেনার বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘‘পাকিস্তানের মাটি থেকে কোনও রকম অনুপ্রবেশ হয়নি।’’
কিন্তু একই ভাবে উরি হামলার মুহূর্তটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমও। শুধু তাদের তির ভারতের দিকে। একটি পাক সংবাদপত্রের ব্যাখ্যা, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণসভায় যোগ দিতে ইতিমধ্যেই নিউ ইয়র্ক উড়ে গিয়েছেন নওয়াজ শরিফ। সেখানে তিনি কাশ্মীর সমস্যা তুলে ধরবেন। বেছে বেছে ঠিক তার আগেই উরির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা হওয়াটা ‘সন্দেহজনক।’ সংবাদপত্রটি লিখেছে, ‘‘পাক নিরাপত্তা-কর্তাদের মতে পঠানকোটের মতো উরি হামলাও ভারতের সাজানো। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নওয়াজ শরিফ কাশ্মীরে ভারতের অত্যাচারের কথা তুলে ধরবেন। তা ঠেকাতে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের ডঙ্কা বাজানোর জন্যই এই উরি হামলা।’’ সংবাদপত্রটির বক্তব্য, ‘‘ধূর্ত সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে ভারতের রাজনৈতিক দল এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি উদ্ভট, ছদ্ম অভিযান পরিকল্পনার জন্য কুখ্যাত। তাদের উদ্দেশ্য, বিশ্বের চোখে পাকিস্তানকে ছোট করা।’’ এর পরেই লেখা হয়েছে ‘‘ভারতের এই সাজানো রূপকথাটি তুলে ধরার সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা স্পষ্ট যে রাষ্ট্রপুঞ্জে নওয়াজ শরিফের বক্তব্যকে লঘু করে দিতে চায় নয়াদিল্লি।’’
পাকিস্তানের অন্য একটি সংবাদপত্র এক প্রবীণ সেনাকর্তাকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, ‘‘উরি হামলা চলাকালীনই ভারতের প্রাক্তন জেনারেল এবং কূটনীতিকরা পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছিলেন। এর থেকেই পরিষ্কার, ভারত আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল, তারা পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপাবে।’’ উরি হামলার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই সেনাকর্তাও। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরবাসীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিক থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই এই হামলা।’’
করাচি থেকে প্রকাশিত আর একটি ইংরেজি দৈনিক লিখেছে, ‘‘নয়াদিল্লি এই ভাবে ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করায় ভারত-পাক সম্পর্ক অস্থিরতার এক নতুন মোড়ে এসে দাঁড়াল।’’ সংবাদপত্রটির বক্তব্য, ‘‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিচ্ছেন না। এতে হয়তো সরাসরি বাগ্যুদ্ধ এড়ানো যাবে। কিন্তু ভারত সেই ঘুরেফিরে পাকিস্তানকেই দায়ী করে চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy