জে পি নাড্ডা। — ফাইল চিত্র।
নিজ রাজ্য হিমাচল প্রদেশে পরাজয়ের পরে নীরবে ডানা ছাঁটা হল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার। সূত্রের মতে, আপাতত আগামী দিনে টিকিট বণ্টনের মতো বিষয় থেকে তাঁকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। দিল্লি পুরসভা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বি এল সন্তোষের ভূমিকাতেও ক্ষুব্ধ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ।
এ মাসে যে তিনটি নির্বাচনের ফলাফল ঘিরে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছিল, তার মধ্যে দিল্লি পুরসভার লড়াই কঠিন হবে বলে ধরেই নিয়েছিলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশে দল জয় পাবে বলেই মনে করা হয়েছিল। সূত্রের মতে, হিমাচল প্রদেশে কান ঘেঁষে পরাজয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি সূত্রের মতে, ২০২৪ সালে লোকসভায় জিতে তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়াই এখন পাখির চোখ মোদীর। যে স্বপ্নপূরণে কোনও আপসে রাজি নন তিনি। দলের কেন্দ্রীয় এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা পর্যন্ত একটি বিধানসভা নির্বাচনে হারা মানেও মোদীর স্বপ্নপূরণে বাধা সৃষ্টি হওয়া।’’ গত ৮ ডিসেম্বর ভোটের ফল বার হওয়ার পরে দিল্লির দলীয় সদর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার পরেই দিল্লি ও হিমাচলে হারের কারণ খুঁজতে বৈঠকে বসেন তিনি। বৈঠকে অমিত শাহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নড্ডা ও সন্তোষ।
সূত্রের মতে, বৈঠকে প্রথমেই আলোচনা হয় ভোটপ্রাপ্তির পরিসংখ্যান নিয়ে। তাতে দেখা যায় হিমাচলে মাত্র ০.৯ শতাংশ ভোট কম পেয়েছে দল। দিল্লিতে কেজরীওয়ালের দলের চেয়ে তিন শতাংশের ভোট কম পেয়েছে বিজেপি। সূত্রের মতে, বৈঠকে মোদী বলেন, এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় দলীয় সংগঠন ভাল কাজ করেছে। সাংগঠনিক দিক থেকে প্রস্তুতির কোনও অভাব ছিল না। অন্য দিকে হিমাচলের ভোটে বিজেপি যে ভাবে প্রচারের সুর বেঁধেছিল, সেই সুরেই ভোট হয়েছে। বিরোধীরা নতুন করে কোনও ভাষ্য তৈরি করতে পারেনি। তার মানে, সূত্রের মতে, মোদী মনে করছেন, দিল্লি ও হিমাচলে সংগঠন ঠিক কাজ করলেও দলের হারের মূল কারণ টিকিট বণ্টনে ভুল।
এর মধ্যে হিমাচলে টিকিট দেওয়ার মূল দায়িত্ব ছিল জে পি নড্ডার। দলীয় সূত্রের মতে, প্রায় জনা কুড়ি বিধায়কের এ বার টিকিট কাটা পড়েছিল। প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার কথা মাথায় রেখে নতুন মুখ বেছে নেন নড্ডা। গোড়া থেকেই বিক্ষুব্ধেরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন, তা জানতেন বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে তা সত্ত্বেও কেন নড্ডা তাঁদের কাছে টানার চেষ্টা করেননি, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে। কিছু কেন্দ্রীয় নেতার মতে, নিজের রাজ্যে ভোট বলে কিছুটা হলেও আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলেন নড্ডা। তিনি ভেবেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সামলে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। প্রায় এক ডজন আসনে বিক্ষুব্ধদের ভোট কাটা দলীয় প্রার্থীদের হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সূত্রের মতে, নড্ডার ওই গা-ছাড়া মনোভাব ভাল ভাবে নেননি প্রধানমন্ত্রী। তাই ৮ ডিসেম্বরের বৈঠকে ঠিক হয়, আগামী বছরে যে ৯টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেখানে টিকিট বণ্টনের গুরু দায়িত্বে নড্ডার সরাসরি কোনও ভূমিকা থাকবে না। তিনি কেবল সাংগঠনিক কাজে, বিশেষ করে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সংগঠনকে শক্তিশালী করার উপরে জোর দেবেন। টিকিট বণ্টনের বিষয়টি আগামী দিনে কার্যত একা হাতেই সামলাবেন অমিত শাহ।
অন্য দিকে দিল্লির ক্ষেত্রেও গোড়া থেকেই টিকিট বণ্টন নিয়ে অভিযোগ ছিল বি এল সন্তোষের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি গত পনেরো বছরে দিল্লি পুরসভার উন্নয়নের ছবি তুলে ধরার পরিবর্তে যে ভাবে কেবল কেজরীওয়ালের দুর্নীতি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের জেলে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার ভিডিয়ো নিয়ে নেতিবাচক প্রচারে নেমেছিল দল, তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy