Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আনাজ বিক্রি থেকে স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারি

২০০১ সালের ২২ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছিল তেলগিকে। তার বিরুদ্ধে ঝুলছিল মোট ৪৮টি মামলা। তার মধ্যে এই স্ট্যাম্প পেপার কেলেঙ্কারির মামলা ছিল।

আব্দুল করিম তেলগি

আব্দুল করিম তেলগি

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

সামান্য আনাজ বিক্রেতা থেকে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জাল স্ট্যাম্প পেপার কেলেঙ্কারির মূল চক্রী— এই ভাবেই বিশাল সাম্রাজ্যের শাখাপ্রশাখা বিস্তার করেছিল আব্দুল করিম তেলগি।

গত কাল বিকেলেই বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তেলগির। বয়স হয়েছিল ৫৬। কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনে ভুগছিলেন তিনি। গত সপ্তাহে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ায় অসুবিধা হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছে সেখানেই।

২০০১ সালের ২২ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছিল তেলগিকে। তার বিরুদ্ধে ঝুলছিল মোট ৪৮টি মামলা। তার মধ্যে এই স্ট্যাম্প পেপার কেলেঙ্কারির মামলা ছিল। এ হেন দুর্নীতির চাঁই তেলগি গ্রেফতার হওয়ার দু’বছর পরে ২০০৩ সালে সামনে এসেছিল অপরাধী, রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশের এক যোগসূত্রের কাহিনি।

তেলগির উত্থানের গল্পটাও যথেষ্ট আগ্রহ জাগায়। জন্ম কর্নাটকের বেলগামের খননপুরে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তেলগি। বাবাকে হারিয়েছিল শৈশবেই। তবুও অর্থাভাবে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়নি তেলগি। ট্রেনে ফল-আনাজ বিক্রি করেই পড়াশোনাটা চালিয়ে যাচ্ছিল সে। এর পর স্নাতক হয়ে চলে গিয়েছিল সৌদি আরবে। সাত বছর পরে সেখান থেকে ফিরে সেলস একজিকিউটিভ হিসেবে কেরিয়ার শুরু করে তেলগি। এর পর সে একটি ভুয়ো কনসালটেন্সির জন্য কাজ করেছিল। সেই কাজের জন্যই ১৯৯৪ সালে প্রথম বার গ্রেফতার হয় তেলগি। যদিও ওই বছরেই ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল সে। এর পরে নাসিকে সরকারি ইন্ডিয়া সিকিওরিটি প্রেস থেকে স্ট্যাম্প পেপার ও ছাপার কালি বিক্রির সরকারি লাইসেন্স পেয়ে যায় সে।

তেলগির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওই সরকারি প্রেসের বেশ কয়েক জন অফিসারকে ঘুষ দিয়েছিল সে। সেই সঙ্গে জাল স্ট্যাম্প পেপার ছাপানোর জন্য সরকারি নিলাম থেকে যন্ত্রপাতিও কিনেছিল। তেলগি এর পর ওই জাল স্ট্যাম্প পেপার বিক্রি করছিল ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থাগুলির কাছে।

এর পর তদন্ত যত এগিয়েছে, তাজ্জব বনে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা যায়, তেলগি জাল স্ট্যাম্প পেপারের ব্যবসাকে বড় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তার হয়ে কাজ করতো প্রায় সাড়ে তিনশো এজেন্ট। তেলগি এই কাজের জন্য হাত করেছিল পুলিশ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। এমনকী কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমের দাবি, তদন্ত বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তেলগি পুলিশকে ঘুষও দিয়েছিল।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তেলগিকে ২০২ কোটি টাকা জরিমানা ও ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল আদালত।

অন্য বিষয়গুলি:

Abdul Karim Telgi Stamp Paper Death Scammer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy