গত বছর ১৭ অগস্ট সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। — ফাইল ছবি।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল আশঙ্কা করেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। আবগারি নীতি দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রেফতার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া।
২০২২ সালের ৩১ জুলাই রদ হয় দিল্লি সরকারের আবগারি নীতি ২০২১-২২। তার পর থেকেই আম আদমি পার্টি (আপ)-এর নেতা, মন্ত্রীরা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়েছেন। অভিযুক্ত হয়েছেন সিসৌদিয়া। তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। এ বার গ্রেফতার হলেন তিনি।
১। ২০২২ সালের ২২ জুলাই দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা অভিযোগ করেন, নতুন আবগারি নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেন। দিল্লির মুখ্য সচিব একটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, সেখানে মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। মদের ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই উপরাজ্যপাল কড়া পদক্ষেপ করেন।
২। ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সিসৌদিয়া জানান, পরবর্তী ছ’মাস দিল্লিতে পুরনো আবগারি নীতিই কার্যকর থাকবে। যত দিন না নতুন আবগারি নীতি চালু হচ্ছে, তত দিন পুরনো নীতি মেনে চলা হবে। সিসৌদিয়া দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি আবগারি দফতরের প্রধান।
৩। ১৭ অগস্ট সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। তাঁর পাশাপাশি তৎকালীন আবগারি দফতরের আধিকারিক, কয়েক জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হয়।
৪। ১৯ অগস্ট সিসৌদিয়া এবং আপের তিন নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। দিল্লি-এনসিআরের বেশ কিছু জায়গায়ও তল্লাশি চলে।
৫। ২২ অগস্ট ইডি তদন্তে নামে। সিবিআইয়ের থেকে মামলার নথি চায়। এর পর টাকা নয়ছয়ের মামলা রুজু করে।
৬। ৩০ অগস্ট পিএনবির গাজিয়াবাদের শাখায় তল্লাশি সিবিআইয়ের। সেখানেই রয়েছে সিসৌদিয়ার লকার। তিনি দাবি করেন, সিবিআই লকারে কিছু না পেয়ে ক্লিনচিট দিয়েছে।
৭। ৬ এবং ১৬ সেপ্টেম্বর আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। মুম্বই, তেলঙ্গানা, পঞ্জাব, দিল্লি-এনসিআরে হয় তল্লাশি।
১৯ সেপ্টেম্বর আপ বিধায়ক দুর্গেশ পাঠককে তলব করে ১০ ঘণ্টা জেরা করে সিবিআই। সূত্রের খবর, আবগারি কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজয় নায়ারের মুম্বইয়ের বাড়িতে যখন তল্লাশি চলছিল, তখন সেখানে ছিলেন পাঠক।
৮। ২৭ সেপ্টেম্বর বিজয়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। তিনি আপের জনসংযোগের দায়িত্বে রয়েছেন। ২৮ সেপ্টেম্বর পানীয় ব্যবসায়ী সমীর মহেন্দ্রুকে গ্রেফতার করে ইডি। এফআইআরে বলা হয়েছিল, সিসৌদিয়ার ‘ঘনিষ্ঠ’-দের দু’বার প্রায় কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন মহেদ্রু।
৯। ৭ অক্টোবর ইডি আবারও দিল্লি-এনসিআর-সহ দেশের ৩৫টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। ১০ অক্টোবর এই মামলায় আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
১০। ১৭ অক্টোবর সিসৌদিয়াকে ফের ন’ঘণ্টা জেরা করে সিবিআই। সিসৌদিয়া দাবি করেন, তাঁকে আপ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
১৪ নভেম্বরে বিজয় এবং হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী অভিষেক বইনাপল্লিকে গ্রেফতার করে ইডি।
১১। ২৫ নভেম্বর ইডি আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। তাতে ৭ জনের নাম থাকলেও নাম ছিল না সিসৌদিয়ার।
১২। ৩০ নভেম্বর সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ অমিত অরোরাকে গ্রেফতার করে ইডি। আবগারি কাণ্ডে তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রীর কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মেয়ে কে কবিতার নাম করে ইডি। ১১ ডিসেম্বর কে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে গিয়ে জেরা করে ইডি।
১৩। ২ ফেব্রুয়ারি ইডি চার্জশিট পেশ করে দাবি করে, আবগারি কাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মহেন্দ্রুর সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা হয়েছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। মহেন্দ্রুকে আবগারিকাণ্ডে অভিযুক্ত বিজয়ের উপর ভরসা করতে বলেন।
১৪। ৯ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞাপন সংস্থার মালিক রাজেশ জোশীকে গ্রেফতার করে ইডি। অভিযোগ করে, এই সংস্থার টাকা গোয়ায় নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করেছে আপ।
১৫। ১৮ ফেব্রুয়ারি সিসৌদিয়াকে আবারও সমন পাঠায় সিবিআই। সিসৌদিয়া জানান, বাজেট নিয়ে প্রস্তুতির কারণে হাজিরা দিতে পারছেন না। সময় চেয়ে নেন তিনি। সিবিআই নতুন করে সমন পাঠিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি জেরার জন্য ডাকে। এ বার ২৬ ফেব্রুয়ারি, রবিবার গ্রেফতার হলেন সিসৌদিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy