দলবদল কংগ্রেসের সংস্কৃতি, আম আদমি পার্টি (আপ)-র নয়। মঙ্গলবার দিল্লিতে তাঁর রাজ্যের আপ বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই দাবি করলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পঞ্জাবের আপ সরকারের কোনও সঙ্কট নেই।’’
আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল-সহ দলের শীর্ষ নেতারা দিল্লির কপূরথালা হাউসে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন পঞ্জাবের ৯৩ জন আপ বিধায়কের মধ্যে ৯১ জন। শনিবার দিল্লির বিধানসভা ভোটে আপের ভরাডুবির পরেই দলের পঞ্জাব সরকারের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিংহ বাজওয়া দাবি করেছিলেন, ৩০ জন আপ বিধায়কের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে। তার পরেই তড়িঘড়ি পঞ্জাবের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করলেন কেজরী।
আরও পড়ুন:
১১৭ সদস্যের পঞ্জাব বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদু সংখ্যা’ ৫৯। বর্তমানে একটি আসন খালি থাকলেও পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ৫৯ জন বিধায়কের সমর্থনই প্রয়োজন। আপের মুখ্যমন্ত্রী মান-সহ আপের বিধায়ক সংখ্যা ৯৩। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের ১৬। এ ছাড়া, শিরোমণি অকালি দলের তিন, বিজেপির দুই এবং এক জন করে বিএসপি ও নির্দল বিধায়ক রয়েছেন পঞ্জাব বিধানসভায়। অর্থাৎ, বাজওয়ার দাবিমতো ৩০ জন আপ বিধায়কের সমর্থন পেলেও কংগ্রেসের পক্ষে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
কিন্তু রয়েছে অন্য অঙ্ক। ঘটনাচক্রে, দিল্লিতে বিধানসভা ভোটের এক সপ্তাহ আগে ‘রহস্যজনক’ গাড়ি থেকে নগদ আট লক্ষ টাকা এবং মাদক উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তরজা ছড়িয়েছিল দিল্লিতে। কারণ, টাকা ও মাদকের সঙ্গে সেই গাড়ি থেকে আপের প্রচারপত্র মিলেছিল বলেও দিল্লি পুলিশ দাবি করে। গাড়িটি আটক করা হয়েছিল পঞ্জাব ভবনের সামনে থেকে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনও ছিল পঞ্জাবের। সে সময়ই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর সরকার ফেলার ‘চক্রান্ত’ করছে বিজেপি। দিল্লিতে আপ সরকারের পতনের পরে কেজরী-ঘনিষ্ঠ মানের ‘ভবিষ্যৎ’ ঘিরে তাই তৈরি হয়েছে জল্পনা এবং সংশয়। এমনকি, মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্ডের পথ অনুসরণ করে মান এ বার কেজরীকে ছেড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ককে নিয়ে এনডিএতে শামিল হতে পারেন বলেও আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আবহে দিল্লির বৈঠকে অধিকাংশ বিধায়ক হাজির হওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে কেজরী।