আরএসএস-কে নিয়ে বিতর্কিত প্রশ্ন করার দায়ে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের এক সরকারি কলেজের অধ্যাপিকাকে গোটা চাকরি জীবনের মতো পরীক্ষা প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সীমা পনওয়ার নামে ওই শিক্ষিকা মিরাট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষায় আরএসএস সম্পর্কিত দু’টি ‘অস্বস্তিকর’ প্রশ্ন করেছিলেন। ওই প্রশ্নপত্রের প্রতিবাদে সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায়। এর পরেই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছে চৌধরি চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রশ্নপত্রে আরএসএস সম্পর্কিত দু’টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ছিল। কয়েকটি উত্তর থেকে সঠিকটি বাছতে বলা হয়। একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়, আরএসএসের উত্থানের কারণ কি? সম্ভাব্য জবাবের একটিতে ছিল: ধর্মীয় ও জাতভিত্তিক রাজনীতি। অন্য প্রশ্নে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট ও মাওবাদীদের সঙ্গে আরএসএসের নাম উল্লেখ করা ছিল। পরীক্ষার দু’দিন পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এবিভিপি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ধীরেন্দ্র কুমার বর্মা ঘোষণা করেছেন, ‘‘সারা জীবনের মতো ওই অধ্যাপিকাকে পরীক্ষা প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, বিশেষজ্ঞ কেউ প্রশ্নপত্র তৈরি করলে বিশ্ববিদ্যালয় সেটি খতিয়ে দেখে না। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন তৈরির পিছনে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বর্মা জানান, বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা অধ্যাপিকা ক্ষমা চেয়েছেন।
তবে জানা গিয়েছে, অধ্যাপিকা পনওয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যে লিখিত জবাব দিয়েছেন, তাতে তিনি জানিয়েছেন, টেক্সটবুক থেকে এবং সিলেবাসের মধ্যেই প্রশ্ন করেছেন তিনি। অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, ২৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন
তিনি। পরীক্ষার কোনও প্রশ্নই সিলেবাসের বাইরের ছিল না। এমসিকিউ-এর সঙ্গে ঠিক-ভুল উত্তর রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃত এম লক্ষীকান্তের বইটিতে আরএসএস-কে অন্যতম ধর্মীয় চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হিসেবে দেখানো হয়েছে বলেও যুক্তি দিয়েছেন তিনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)