১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্বে উদ্যাপিত হচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। অন্য দিকে, জম্মু-কাশ্মীরে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ছ’বছর পূর্ণ হল শুক্রবার। এই প্রেক্ষিতে বিহারের পার্কে পার্কে হানা দিল একদল যুবক। রড, লাঠি হাতে প্রেমিক-প্রেমিকাকে ধরছেন ওই যুবকেরা। তাঁদের দাবি, আগে দেশপ্রেম, পরে নিজের প্রেম। হুঁশিয়ারির সুরে ওই যুবকেরা বলছেন, ‘‘আজ প্রেমদিবস উদ্যাপনের দিন নয়, পুলওয়ামায় নিহত ৪০ জন বীরকে স্মরণের দিন।’’ সেই ‘দেশপ্রেমের পাঠ’ পড়াতে গিয়ে কারও কারও উপর হাত তুলতেও কসুর করছেন না কেউ কেউ। শুক্রবার নীতীশ কুমারের রাজ্যে পার্কে পার্কে এমনই ছবি দেখা গেল। ডান্ডা হাতে যুবকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ‘হিন্দু শিব ভবানী সেবা’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে মজে থাকা যুবক-যুবতীদের সনাতন সংস্কার শেখাচ্ছেন।
শুক্রবার পটনার একটি পার্কে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েছিলেন ওই ‘হিন্দু শিব ভবানী সেবা’-র সদস্যেরা। পার্কে বসা যুগলকে দেখলেই তাঁদের কাছে গিয়ে বার্তা দিয়েছেন, ‘‘প্রেমদিবসের উদ্যাপন বন্ধ কর। যা, পুলওয়ামার বীরদের স্মরণ কর।’’ কেউ কেউ তর্ক করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তাতে হুমকি, মারধর জুটেছে। কেউ কেউ চড়-থাপ্পড় খেয়েছেন বলেও অভিযোগ। ওই ‘দেশপ্রেমিকদের’ দাবি, ‘‘প্রেমদিবসের নামে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে আদিখ্যেতা হচ্ছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির উদ্যাপন এ দেশে চলবে না।’’ শুক্রবার একই রকম ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদেও। সেখানে ‘বজরং দল’ এবং ‘ভারতীয় সুফি ফাউন্ডেশন’ নামে দুই সংগঠনের সদস্যেরা ‘অভিযানে’ নেমেছেন। প্রেমিক-প্রেমিকাকে ধরে তাঁদের হুঁশিয়ারি, ভারতে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-র উদ্যাপন নৈব নৈব চ।
২০১৯ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি ফিদায়েঁ জঙ্গি হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন পুলওয়ামায়। সে দিন ৭৮টি বাসে করে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে হামলা চালায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই দিনটিকে স্মরণ করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “২০১৯ সালে পুলওয়ামায় যে সাহসী বীরদের হারিয়েছি, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁদের আত্মত্যাগ এবং জাতির প্রতি নিবেদন আগামী প্রজন্ম কখনও ভুলবে না।”