অশান্ত: পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত বছর চোদ্দোর কিশোর মুর্তাজার দেহ আঁকড়ে আপনজন।
অভিযান শুরু হয়েছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। তার জেরে শেষ পর্যন্ত নিহত হলেন সাত জন স্থানীয় বাসিন্দা। ইন্দোনেশিয়া থেকে এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরা এক যুবক-সহ এই সাত জনের মৃত্যু নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ ভোরে পুলওয়ামার সিরনু গ্রামে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়ে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। ওই এলাকায় আত্মগোপনকারী জঙ্গিদের মধ্যে প্রাক্তন সেনা জাহুর আহমেদ ঠোকরও রয়েছে বলে জানতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। গত বছরের জুলাই মাসে ঠোকর বারামুলার সেনা ছাউনি থেকে রাইফেল চুরি করে পালায়। তার পরে জঙ্গি দলে যোগ দেয় সে।
পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশির সময়ে জঙ্গিরা জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। তাতে নিহত হন সাবর কিষণ সিংহ রাজপুত নামে এক সেনা। নিহত হয় তিন জঙ্গিও। ঠোকর ছা়ড়া নিহত অন্য দুই জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ মিনিট পঁচিশের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেই বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে এক দল বিক্ষোভকারী। সেনার গাড়িতে উঠে পড়ার চেষ্টা করে অনেকে। পুলিশের দাবি, প্রথমে সতর্ক করার জন্য শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে গুলি ছো়ড়ে বাহিনী।
আরও পড়ুন: রাফাল রায়ে ব্যাকরণ ভুল! মুখ বাঁচাতে কোর্টেই কেন্দ্র
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পুলওয়ামার বাসিন্দা আবিদ হুসেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে এমবিএ ডিগ্রি শেষ করে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। ওই তরুণ দম্পতির একটি তিন মাসের শিশুও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শাহবাজ আলি, সুহেল আহমেদ, লিয়াকত আহমেদ, আমির আহমেদ পাল্লা, আবিদ হুসেন লোন ও মুর্তাজাও পুলওয়ামারই বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে মুর্তাজার বয়স চোদ্দো। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সাত জনেরই মাথা ও বুকে গুলি করা হয়েছে। কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনারকে পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেইসঙ্গে সংঘর্ষস্থলে না আসতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছেন তিনি।
আহত ৭০ জনের মধ্যে ছ’জনকে আনা হয়েছে শ্রীনগরের হাসপাতালে। তাঁদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সাত জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অঘোষিত হরতাল শুরু হয় দক্ষিণ কাশ্মীর, শ্রীনগর ও বাদগামে। শ্রীনগরের কিছু অংশেও বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছো়ড়া হয়। পান্থা চক এলাকায় ব্যারিকেড বসিয়েছে সেনা ও পুলিশ। আপাতত সংবাদমাধ্যমেরও ওই ব্যারিকেড পেরিয়ে পুলওয়ামায় যাওয়ার অধিকার নেই।
আরও পড়ুন: মাতৃত্বের ছুটি থেকে জওয়ানদের উঁকিঝুঁকি! যুদ্ধে পাঠানো সম্ভব নয় মেয়েদের, বলছেন সেনাপ্রধান
উপত্যকায় চার দিনের হরতাল ডেকেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। রাজ্যপালের প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সরব মূলস্রোতের দলগুলিও। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির বক্তব্য, ‘‘কোনও দেশ তার নাগরিকদের হত্যা করে লড়াইয়ে জিততে পারে না। রাজ্যপালের প্রশাসন সাধারণ মানুষের প্রাণরক্ষা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ।’’ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার কথায়, ‘‘এটাকে গণহত্যা ছাড়া কিছু বলা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy