দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য দিল্লির রাস্তায় জল ছেটানো হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে রয়েছে দিল্লি। কড়া পদক্ষেপ করেও দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বৃষ্টিই একমাত্র দেশের রাজধানীকে দূষণ থেকে রক্ষা করতে পারে বলে দাবি করলেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করে মঙ্গলবার চিঠি দিলেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, এর আগে দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর জন্য অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তাতে সাড়া মেলেনি। তাই এ বার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন বলে জানিয়েছেন গোপাল।
দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক ‘অতি ভয়ঙ্কর’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এই নিয়ে কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকার একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে বার বার। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে গোপাল বলেন, ‘‘উত্তর ভারতের আকাশ ঢেকে রেখেছে ধোঁয়াশার একাধিক স্তর। এই ধোঁয়াশা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল কৃত্রিম বৃষ্টি। দিল্লিতে এখন মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি তৈরি হয়েছে।’’ এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর হস্তক্ষেপ করা উচিত। দূষণ নিয়ে পদক্ষেপ করা তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। সর্বোপরি, দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রেরই পদক্ষেপ করা উচিত।’’
এখানেই থামেননি তিনি। তাঁর দাবি, দিল্লিকে দূষণমুক্ত করতে এখনই কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর অনুমতি দেওয়া উচিত কেন্দ্রের। মন্ত্রীর দাবি, সেই অনুমতি চেয়ে এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বৈঠক করার জন্য কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। গোপাল জানিয়েছেন, তিনি ভূপেন্দ্রকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন ৩০ অগস্ট। এর পরে ১০ এবং ২৩ অক্টোবরও কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে জবাব আসেনি। এ বার তাই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন তিনি।
দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে দিল্লিতে, তা-ও জানিয়েছেন গোপাল। দূষণ রুখতে চতুর্থ স্তরের পদক্ষেপ (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান বা গ্র্যাপ-৪) চালু করা হয়েছে দিল্লিতে। তার পরেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি দূষণের মাত্রা। তাই এখন দিল্লির ধোঁয়াশা কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সেই পরামর্শ মেনে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এখন কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। গত বছর কানপুর আইআইটি পরীক্ষামূলক ভাবে মেঘের বীজ বুনে কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটিয়েছে। প্রয়োজনে দিল্লিতে তা করা যেতে পারে বলে দাবি গোপালের।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) ৪৯৪ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে, যা এই মরসুমে সর্বোচ্চ। সাধারণত বাতাসের গুণমানের সূচক ৪৫০ অতিক্রম করলেই তা ‘অতি ভয়ানক’ বলে বিবেচিত হয়। আনন্দ বিহার, অশোক বিহার, ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম, জাহাঙ্গিরপুরী-সহ বেশির ভাগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বাতাসের গুণমানের সূচক ৫০০ অতিক্রম করে গিয়েছে। রাজধানী ও সংলগ্ন অঞ্চলে বাতাসের গুণমান পর্যবেক্ষণের জন্য মোট ৩৫টি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে বাতাসের গুণমান সূচক সবচেয়ে কম ছিল দ্বারকায় (৪৮০)। কিন্তু সেটিও ‘অতি ভয়ানক’ পর্যায়ের উপরেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy