বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ। ইরাকে নিহতদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে শেষ হল সাড়ে তিন বছরের প্রতীক্ষা। ইরাক থেকে ৩৮ জন ভারতীয়ের দেহ নিয়ে দেশে ফিরলেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ। কিন্তু বিমানবন্দরে তাঁর মন্তব্যকে ঘিরে ফের বিতর্কে জড়াল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
যে ৩৮ জনের দেহ আনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে পঞ্জাব, হিমাচলপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বাসিন্দারা রয়েছেন। অমৃতসরের পরে পটনা ও কলকাতায় যায় বিশেষ বিমানটি।
অমৃতসরের শ্রী গুরু রামদাসজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল থেকেই ভি়ড় জমান পঞ্জাব ও হিমাচলপ্রদেশ থেকে আসা আত্মীয়েরা। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভি কে। কেন্দ্র নিহতদের কোনও এককালীন ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে কি না জানতে চান সাংবাদিকেরা। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চাকরির ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। তাতেই চটে যান প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে। বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দেওয়াটা বিস্কুট বিলিয়ে দেওয়ার মতো সহজ কাজ নয়। চাকরি দেওয়াটাও ফুটবল খেলা নয়। আমি এখন প্রতিশ্রুতি দেব কী করে? আমার পকেটে কিছু রাখা নেই।’’ উত্তেজিত বিদেশ প্রতিমন্ত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন পঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। ভি কে-র আরও দাবি, ‘‘এই ভারতীয়দের সম্পর্কে কোনও তথ্যই বাগদাদের দূতাবাসে ছিল না। অবৈধ এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশে কাজ করতে যাওয়া রুখতে এর মধ্যেই রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। আমার আশা, অমরেন্দ্র সিংহ সরকার এই বিষয়ে পদক্ষেপ করবে।’’ বিদেশ প্রতিমন্ত্রী জানান, মসুলের কাছে বাদুসের যে এলাকায় ওই দেহগুলি পাওয়া গিয়েছে সেখানে কিছু বিষাক্ত পদার্থেরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। ফলে কফিন খুললে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ইরাকে অনুসন্ধানে সাহায্যকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
পঞ্জাবের বাসিন্দা ২৭ জনের পরিবারকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সিধু। পরিবারের এক জনকে চাকরিও দেবে পঞ্জাব সরকার। বেশ কয়েকটি পরিবারের মতে, পরিবারপ্রতি অন্তত এক জনের চাকরির ব্যবস্থা করা উচিত কেন্দ্রেরও। কারণ, নিহতদের অনেকেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন।
আরও পড়ুন: কফিনবন্দি হয়ে এলেন খোকনেরা
কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভি কে-র মন্তব্যের সমালোচনা শুরু করেন বিরোধীরা। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা টুইটারে লেখেন, ‘‘ভি কে সিংহ কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিচ্ছেন। ক্ষতিপূরণের দাবিকে বিস্কুট বেলানোর সঙ্গে তুলনা করছেন।’’ তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, ‘‘বিতর্কিত জেনারেল মন্ত্রীর কথায় ফের সংবেদনশীলতার অভাব দেখা গেল। দেহ নিয়ে ফেরার সময়ে বিস্কুট, ফুটবলের মতো শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়।’’
রাত দশটা নাগাদ পটনায় পৌঁছয় বিহারের বাসিন্দা পাঁচ জনের দেহ। বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী ও নিহতদের আত্মীয়েরা। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে-র মতে, ‘‘তিন শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্মান পটনায় দেওয়া হয়েছে।’’ নিহতদের পরিবারপিছু এককালীন চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বিহার সরকার। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি সম্পর্কে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘সকলের সম্পর্কেই তথ্য চেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। কোনও না কোনও ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy