বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ে চলছে উদ্ধারকাজ। — ফাইল চিত্র।
৭ অগস্ট। কেরলের গ্রামে বাবা-মাকে রেখে বেঙ্গালুরু পাড়ি দিয়েছিলেন নাউরিপারম্বাথ সুমোদ। একদিন পরেই ভূমিধসে সাফ হয়ে যায় কেরলের কাভালাপ্পারার মুথাপ্পানের একাংশ। মৃতের তালিকায় ছিলেন সুমোদের বাবা-মাও। পরিবার রক্ষা করতে পারেননি, ক্ষতটা এখনও দগদগে। গত মাসে ওয়েনাড়ের ভূমিধসের খবর পেতেই চঞ্চল হয়ে ওঠে সুমোদের মন। সিদ্ধান্ত নেন, ওয়েনাড় গিয়ে উদ্ধারকাজে নামবেন তিনি। এই উদ্যোগে সুমোদ পাশে পেয়েছেন ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো আরও অনেকের পরিজনদের।
২০১৯ এর বিপর্যয়ে সুমোদের মতোই বেঁচে গিয়েছিলেন সুমেশও। এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন বলছে, তিনিও রয়েছেন ওয়েনাড়ের উদ্ধারকারী দলে। এ ছাড়াও রয়েছে আরও ২৪টি পরিবার, যারা সামনে থেকে দেখেছিল ২০১৯-এ কাভালাপ্পারার ভূমিধস। এ বার তাঁরাই এগিয়ে এসেছেন ওয়েনাড়ে বিপর্যস্তদের পাশে দাঁড়াতে!
কেরলের ওয়েনাড়ে ভূমিধসের পর পেরিয়ে গিয়েছে তিন সপ্তাহ। এখনও ছন্দে ফেরেনি ধস কবলিত পাহাড়ি এলাকার জনজীবন। উদ্ধারকাজ শেষের মুখে। সরকারি হিসাবে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮০ জন। সর্বস্বান্ত হাজার হাজার মানুষ। এখনও নিখোঁজ ১৩০ জন। কিন্তু অন্যান্য সূত্র বলছে, মৃতের সংখ্যা ৪০০ পেরিয়েছে। ঘটনার পর দিন থেকেই মলপ্পুরম জেলার চালিয়ার নদীতে ভাসতে দেখা গিয়েছে একের পর এক মৃতদেহ। ধসের জেরে গৃহহীন হয়ে পড়া দশ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে। ধস কবলিতদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সংবাদমাধ্যমকে সুমোদ বলেছেন, ‘‘আমরা উদ্ধারকাজে বিশেষ প্রশিক্ষিত নই। কিন্তু ভূমিধসে চোখের সামনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে দেখেছি গোটা গ্রাম। সাহায্যের জন্য ছুটেছি দরজায় দরজায়। বিপর্যয় কাকে বলে আমরা জানি। তাই খবর পেয়েই ছুটে এসেছি।’’ সকলে মিলে চালিয়ার নদী থেকে মৃতদেহ উদ্ধারে নেমেছেন তাঁরা। প্রবল বর্ষণে ফুঁসতে থাকা চালিয়ারকে উপেক্ষা করেই অপটু হাতে ১৭ দিন টানা চালিয়ে গিয়েছেন উদ্ধারকাজ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৮ অগস্ট রাতের ভূমিধসে পলকের মধ্যেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল কাভালাপ্পারার গ্রাম। নিহত হয়েছিলেন ৫৯ জন, আজও দেহ মেলেনি ১১ জনের। ভাগ্যের জেরে বেঁচে গিয়েছেন কেউ কেউ। সেই দুর্যোগের স্মৃতি বুকে নিয়েই ওয়েনাড়ের পাশে দাঁড়াতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy