Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

দূরদর্শনের দশা নিয়ে দুই কর্তার দুই মত

এক জন বলছেন, দূরদর্শনের অন্দরমহলে কোনও কিছুই ভাল চলছে না। অন্য জন বলছেন, দূরদর্শনই সেরা। দেশের লোক অন্য সব চ্যানেল বাদ দিয়ে দূরদর্শন দেখেই সবথেকে বেশি সন্তুষ্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের দুই উচ্চপদস্থ কর্তা এমনই পরস্পরবিরোধী মতামত পেশ করেছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে। একই দিনে। একই সময়ে। এবং পাশাপাশি বসে!

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩০
Share: Save:

এক জন বলছেন, দূরদর্শনের অন্দরমহলে কোনও কিছুই ভাল চলছে না। অন্য জন বলছেন, দূরদর্শনই সেরা। দেশের লোক অন্য সব চ্যানেল বাদ দিয়ে দূরদর্শন দেখেই সবথেকে বেশি সন্তুষ্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের দুই উচ্চপদস্থ কর্তা এমনই পরস্পরবিরোধী মতামত পেশ করেছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে। একই দিনে। একই সময়ে। এবং পাশাপাশি বসে!

সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে বৈঠকে বসেছিল তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। আলোচনা হচ্ছিল প্রসার ভারতীর কাজ নিয়ে। সেখানেই এমন ঘটনা। প্রসার ভারতীর সিইও জহর সরকার তাঁর সংস্থা তথা দূরদর্শনের কোথায় কী সমস্যা, তা-ও বলেন। প্রসার ভারতীর কাজকর্ম থেকে দূরদর্শনের স্টুডিওর সমস্যাস্পষ্ট করে বলেন জহর। ঠিক তার পরেই তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব বিমল জুলকা বলেন, দূরদর্শনে সব কিছুই ঠিক মতো চলছে। প্রসার ভারতীর অন্দরেও কোনও সমস্যা নেই। জুলকা দাবি করেন, তাঁদের সমীক্ষা বলছে, দর্শকদের সন্তুষ্টির মাপকাঠিতে দূরদর্শনই এক নম্বরে।

দুই পদস্থ কর্তার দু’রকম অবস্থান দেখে বিস্মিত সাংসদরাও। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কার কথা বিশ্বাস করবেন। এই স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। সংসদের এই স্থায়ী কমিটিতেই সবথেকে বেশি নক্ষত্র সমাবেশ। সচিন তেন্ডুলকর, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, জাভেদ আখতার, ডেরেক ও’ব্রায়েনরা এই কমিটির সদস্য। রয়েছেন লালকৃষ্ণ আডবাণীও।

বৈঠকে কমিটির সদস্যরা দূরদর্শনে ‘ডিজিটাইজেশন’-এর কাজ কেমন হয়েছে, তা জানতে চান। এক সদস্য আডবাণীকে দেখিয়ে সরকারি কর্তাদের প্রশ্ন করেন, উনি দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমি যদি ওঁর ১৯৯৫ সালের একটি বক্তৃতার রেকর্ড পেতে চাই, কী ভাবে পাব? উত্তর আসে, কোন দিন, কোথায় বক্তৃতা তা জানিয়ে লিখিত আবেদন করতে হবে। দূরদর্শনের আর্কাইভে কত মিনিটের বক্তৃতা রয়েছে, তা দেখে জানানো হবে। প্রতি মিনিট ৫০ টাকা হিসেবে যত টাকা হবে, তা ডিমান্ড ড্রাফ্ট করে জমা দিতে হবে। তার পরে ডিভিডি করে সেই বক্তৃতা পাঠানো হবে। শুনে ওই সাংসদ হেসে ফেলেন, “এটা ডিজিটাল যুগ না ডাইনোসর যুগ?” হেসে ফেলেন অন্য সাংসদরাও।

দূরদর্শনের হাল নিয়ে সাংসদদের তোপের মুখে তথ্য-সম্প্রচার সচিব দাবি করেন, তিনি সরকারি তথ্য পেশ করেছেন। জহর সরকার জানান, তিনি চিকিৎসকের মতো রোগ নির্ণয় করে আসল এক্স-রে রিপোর্ট পেশ করেছেন। পরে কমিটির সদস্য এক সাংসদ কটাক্ষ করেন, “আপনারা দুই চিকিৎসক দু’রকম কথা বলছেন! আমরা জানি না, কাকে বিশ্বাস করব!”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE