অসমে প্রথম দফার ভোটে ইভিএম হাতে নির্বাচনী কেন্দ্রের পথে পোলিং অফিসার। রবিবার শিলচরে। পিটিআইয়ের ছবি।
প্রস্তুতি চূড়ান্ত। রাত পোহালেই ভোট। সকাল ৭টা থেকে লাইন দিয়ে ভোটাররা এগোবেন ইভিএমের দিকে। ভোট-পর্ব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য আজ সকাল থেকে জেলাসদরগুলিতে ভোটসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ বারের নির্বাচনে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে মহিলা ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে প্রতিটি ভোটকর্মী মহিলা। এমনকী নিরাপত্তারক্ষীরাও মহিলা। তবে ভোটার অন্যান্য বুথকেন্দ্রের মতোই পুরুষ-মহিলা মিশ্রিত। তা ছাড়া, নির্বাচন কমিশন প্রতিটি বুথে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ায় এ বার প্রচুর নিরাপত্তারক্ষী বাইরে থেকে আনা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা না থাকলেও প্রকৃতি প্রার্থীদের দুশ্চিন্তায় রেখেছে। দুপুর থেকে বৃষ্টি পড়ছে করিমগঞ্জে। সন্ধ্যার পর ইলশেগুঁড়ি চলছে কাছাড়-হাইলাকান্দিতেও।
গত কাল সরব প্রচার শেষ হওয়ার পর থেকে এসএমএসের সাহায্যে চলছে ভোটের আবেদন। কেউ কেউ এই কাজে হোয়াটস-অ্যাপও ব্যবহার করেছেন।
কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, জেলার ৭টি আসনের জন্য দু’টি জায়গা থেকে ভোটসামগ্রী বিতরণ করা হয়। কাছাড় কলেজ থেকে ধলাই, সোনাই ও কাটিগড়ার সামগ্রী যায়। নেট্রিপ থেকে বিতরণ করা হয় বাকি ৪ আসনের ইভিএম।
সুন্দর ভাবেই এই পর্ব শেষ হয়েছে। দ্রুত ভোটসামগ্রী বিলি সম্পন্ন হওয়ায় অধিকাংশ জায়গায় দুপুরের মধ্যে ভোটকর্মীরা পৌঁছে যান। সন্ধ্যার আগে ৮০ শতাংশ বুথ থেকে ভোটকর্মীদের নিরাপদে পৌঁছনোর খবর মিলেছে। বাকিরা যেতে যেতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।
এ বার ‘পোল ফ্রেন্ড’ নামে এক বিশেষ ধরনের মোবাইল-অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে কাছাড়ে। ভোটকর্মীদের প্রত্যেকের মোবাইলে এই অ্যাপ যোগ করা হয়। ভোটসামগ্রী হাতে পাওয়া, ভোটকেন্দ্রে পৌঁছনো, ইভিএম পরীক্ষা করে পুরো প্রস্তুতি সেরে নেওয়া— সব কিছু ওই অ্যাপের সাহায্যে নির্বাচন শাখায় জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি মোবাইলে ভিডিওগ্রাফি করে ওই অ্যাপ ব্যবহার করে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের। বিশ্বনাথনের দাবি, এর সুফল মিলেছে। প্রিসাইডিং অফিসাররা নিয়মিত রিপোর্ট করায় দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয়নি।
শিলচর এনআইটি-র এক ছাত্র ওই অ্যাপ তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে শুধু কাছাড় জেলায় এ বার তা ব্যবহার করা হল। জেলাশাসকের আশা, এই অ্যাপ শীঘ্র কমিশনের অনুমোদন পাবে। গোটা দেশে তার ব্যবহার হতে পারে।
নির্বাচন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছাড় জেলায় মোট ভোটার ১১ লক্ষ ৬ হাজার ৫১৬। এরমধ্যে সন্দেহভাজন বা ডি ভোটার রয়েছেন ৫ হাজার ৫৪০ জন। কমিশনের কাছ থেকে কোনও নির্দেশ না আসায় তাঁরা আগের মতোই ভোট দিতে পারবেন না। জেলায় সব চেয়ে বেশি ভোটার শিলচর আসনে, ২ লক্ষ ৮ হাজার ৭১৭ জন। সব চেয়ে কম বড়খলায়, ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৯৩ জন। মোট প্রার্থী ৬৯ জন।
জি সি কলেজে হয়েছে শিলচর আসনের মহিলা বুথ। মধুমিতা দাস প্রিসাইডিং অফিসার। মধুমিতাদেবী বললেন, ‘‘প্রথম বার ভোটের দায়িত্ব পড়ল। প্রথমে নার্ভাস মনে হলেও একে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছি।’’
হাইলাকান্দি জেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ৫৫৫টি। ভি এম উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সমস্ত ভোটসামগ্রী বিতরণ করা হয়। তিন আসনে এ বার মোট ভোটার ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬৯৬ জন। সর্বাধিক কাটলিছড়ায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৪৩৯ জন। সব চেয়ে কম ভোটার আলগাপুরে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৯ জন।
হাইলাকান্দির জেলাশাসক মলয় বরা জানান, আগে কিছু ভোটকেন্দ্রে হাতির পিঠে ভোটসামগ্রী নিয়ে যেতে হতো। এ বার সে রকম প্রয়োজন পড়েনি। গাড়িতে সব জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। মিজোরাম সীমানার প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ভোটকর্মীরা মিজোরাম হয়ে গিয়েছেন। এ ব্যাপারে মিজোরাম প্রশাসন সব ধরনের সাহায্য করেছে বলে জানান জেলাশাসক বরা।
হাইলাকান্দি বিধানসভা কেন্দ্রের মহিলা বুথ হচ্ছে ইন্দ্রকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ে। একে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এবং কোলে শিশু নিয়ে আসা মহিলাদের জন্য বিশেষ কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
করিমগঞ্জে মোট ভোটকেন্দ্র ৯৭৫টি। তার মধ্যে ২৩২টি অতি-স্পর্শকাতর। ৫৩৫টি স্পর্শকাতর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৩৯ কোম্পানি নিরাপত্তারক্ষীকে জেলায় ভোটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভোটকর্মী ৩ হাজার ৯০০ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy