আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বিতর্কে এ বার আত্মপক্ষ সমর্থনে নামল মোদী সরকার। গত কাল এই বিষয়কে নিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা। অস্বস্তিতে পড়ে আজ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে সরকার দায়বদ্ধ। কেন্দ্র কোনও অনৈতিক পদক্ষেপ করেনি। তা ছাড়া, গোপাল সুব্রহ্মণ্যম নিজেই তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেন। ফলে সুপ্রিম কোর্ট চাইলেও তাঁকে আর বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা সম্ভব ছিল না।
তবে সাহসী মুখ দেখালেও সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির সমালোচনা সরকারকে যে গোড়াতেই কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে, সংশয় নেই। কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠনের এক মাস হতে না হতেই লোঢার সমালোচনা বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি গত কাল বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের জন্য চার জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের নামটি কেন বেছে বেছে বাদ দেওয়া হল, তা বোধগম্য নয়। তিনি জানান, এ ব্যাপারে সরকারের তরফে তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা বিদেশে সফরে থাকার সময়েই সরকারের গতিবিধি বুঝে ইউপিএ জমানার সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাবিত তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহের বিরুদ্ধে মামলা লড়ার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ব্যবহার করছে সরকার।
গোটা পর্বে স্বাভাবিক ভাবেই সরকার তথা বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ের রসদ পেয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে খাটো করা বিজেপি-র দর্শনের মধ্যেই রয়েছে। গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বিশিষ্ট আইনজ্ঞ। তাঁর অপরাধ এ টুকুই যে তিনি অমিত শাহের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। সেই কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ নিয়েও রাজনীতি করল সরকার। সিঙ্ঘভির বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তাঁর পদের মর্যাদার কারণে অনেক কিছুই প্রকাশ্যে বলতে পারেন না। এ ব্যাপারে কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকে। কিন্তু তার পরেও প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা যে সমালোচনা করেছেন, তা মোদীর সরকারের জন্য লজ্জাজনক।
যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বও বুঝতে পারছেন, কেন্দ্রে নতুন সরকারের মধুচন্দ্রিমার সময় এখনও কাটেনি। মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে খুব বেশি সমালোচনা শুনতে এখনই প্রস্তুত নন। তবে অভিষেকদের মতে, এ ধরনের অনৈতিক পদক্ষেপ ক্রমশ পুঞ্জীভূত হলে ভবিষ্যতে বিজেপি-কে চেপে ধরার সুযোগ পাবে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy