Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গাঁধীদের গড়ে তীব্র আক্রমণ হানলেন নমো

বদলা নয়। উন্নয়নের পথে বদলের কথা বলেও গোটা গাঁধী পরিবারকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর তা করলেন একেবারে গাঁধী পরিবারের গড় অমেঠীর মাটিতে দাঁড়িয়েই। মোদীর তীক্ষ্ম আক্রমণ থেকে সোমবার রেহাই পেলেন না সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কাএমনকী প্রয়াত রাজীব গাঁধীও। অমেঠীর প্রচারের শেষ দিনের শেষ প্রহরে মোদী গাঁধী পরিবারের থেকে আসা আক্রমণের জবাবও দিয়েছেন নিখুঁত শব্দচয়নে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৪ ০২:৫৬
Share: Save:

বদলা নয়। উন্নয়নের পথে বদলের কথা বলেও গোটা গাঁধী পরিবারকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর তা করলেন একেবারে গাঁধী পরিবারের গড় অমেঠীর মাটিতে দাঁড়িয়েই।

মোদীর তীক্ষ্ম আক্রমণ থেকে সোমবার রেহাই পেলেন না সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কাএমনকী প্রয়াত রাজীব গাঁধীও। অমেঠীর প্রচারের শেষ দিনের শেষ প্রহরে মোদী গাঁধী পরিবারের থেকে আসা আক্রমণের জবাবও দিয়েছেন নিখুঁত শব্দচয়নে। তাঁর ‘ছোট বোন’ অমেঠীর বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানিকে জয়ী করার আবেদন নিয়ে।

গাঁধী পরিবার থেকে অভিযোগ এসেছিল, মোদী রোষের রাজনীতি করেন। ফল প্রকাশের আগেই মোদী নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবতে শুরু করেছেন। সব অভিযোগের জবাব দিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। জানান, সনিয়ার হতাশা তিনি বোঝেন। দশ বছর ধরে ছেলেকে তৈরি করেও সব পরিশ্রম জলে গিয়েছে। তবুও সনিয়া মানছেন, মোদী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তাঁর মুখে ফুলচন্দন।

রোষের রাজনীতির জবাবে মোদী বলেন, রাজীব গাঁধী একবার রেগে গিয়ে বিমানবন্দরে সকলের সামনে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীকে যারপরনাই অপমান করেছিলেন। আর সনিয়া গাঁধীর রোষের ফলে দলের এক সময়ের সভাপতি সীতারাম কেশরীকে চ্যাংদোলা করে কংগ্রেস দফতর থেকে ফুটপাথে ফেলে আসা হয়েছে। মৃত্যুর পরেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিংহ রাওয়ের শবদেহ কংগ্রেস দফতরে নেওয়া হয়নি। আর রাহুল গাঁধীর রোষ? তিনি তো প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থাকার সময় মন্ত্রিসভার পাশ করা বিল ছিঁড়ে ফেলতে বলেন! আর প্রিয়ঙ্কা সদ্য গতকালই অমেঠীর প্রার্থী স্মৃতি ইরানি সম্পর্কে বলেছেন, “উনি কে?” মোদীর প্রশ্ন, রাজনীতিতে এত অহঙ্কার, ঔদ্ধত্য কোথা থেকে আসে? মোদী বলেন, “আমি গরিব ঘরের চা- বিক্রেতা ছেলে, চেয়েচিন্তে চলি। ওঁদের মতো লুঠ করি না। যদি হেরে যাই, কেটলি তৈরি। ফের চা বেচে বাঁচব। চার বারের সুখী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেও আমার মা অটো-রিক্সা ভাড়া করে ভোট দিতে যান।”

অমেঠীর ভোট প্রচার শেষ। তবে মোদীর আক্রমণের জবাব দিয়ে প্রিয়ঙ্কা আজ বলেন, “আমার বাবা শহিদ হয়েছেন। মোদী শহিদকে অপমান করেছেন। অমেঠীর বুথে বুথে কংগ্রেস কর্মীরা এর জবাব দেবেন।” এই প্রত্যাশিত জবাবের প্রেক্ষাপটও মোদী তৈরি করে রেখেছিলেন। জনসভাতেই বলে এসেছেন, “বদলার রাজনীতি আমার পথ নয়। আমার ছোট বোন স্মৃতি ইরানিকে প্রার্থী করা হয়েছে রাহুলকে সমস্যায় ফেলার জন্য নয়। বরং অমেঠীর সমস্যা কমানোর জন্য। আমাকে ওঁরা যত গালি দেওয়ার দিন। অন্তত আমি তো ওঁদের হতাশা বের করাতে কাজে এলাম।”

রাজনীতিতে এক অলিখিত নিয়ম রয়েছে। দলের কোনও বড় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলের বড় নেতারা প্রচার করেন না। রায়বরেলীতে সনিয়ার বিরুদ্ধে বিজেপির বড় নেতারা প্রচার করেননি। কিন্তু সেই প্রথা ভেঙে আজ মোদী রাহুল গাঁধীর কেন্দ্রে প্রচার করলেন। মোদী পৌঁছনোর আগেই দিল্লিতে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা সাংবাদিক সম্মেলন করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে দেখান, গুজরাতের মডেলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস দেশে প্রচার করলেও অমেঠীতে উন্নয়নের কী হাল! অরুণ জেটলিও ব্লগ লিখে গাঁধী পরিবারকে নিশানা করেন। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, এ বারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে যখন মোদীকে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলি রেয়াত করছে না, রাহুলের জনপ্রিয়তা কমায় অমেঠী থেকেই প্রিয়ঙ্কা নিরন্তর মোদীকে বিঁধেছেন, সেই সময় রাহুলকে পরাস্ত করতে বিজেপির সর্বশক্তিতে নেমে পড়া উচিত।

কিন্তু এই কাজটি আদৌ সহজ নয়। বিজেপি জানে, গতবারেও অমেঠীতে রাহুল বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। বিজেপির প্রার্থী ধারে কাছেও ছিলেন না। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, এ বার হাওয়া বদলেছে। রাহুলের জয় আগের মতো নিষ্কন্টক হবে না। লড়াইয়ে রয়েছে স্মৃতিও। তাই অমেঠীতে সর্বশক্তি দিয়ে দল ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে এই আশায়, যদি কোনওভাবে গাঁধী পরিবারের মুখকে এ বারে পরাস্ত করা সম্ভব হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

amethi namo modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE