ইন্টারনেটে সেই বিজ্ঞাপন। ছবি: চন্দন পাল।
কুইকারে বিক্রি হচ্ছে ‘আমির‘, ‘সলমন’, ‘শাহরুখ!’
‘শাহরুখ’-এর ওজন ৮৮ কেজি, দাম ৩৮ হাজার টাকা। ৮৪ কেজির ‘আমির’-এর দাম ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আর ‘সলমন’-এর ওজন ৭২ কেজি, দাম ৩১ হাজার টাকা। বকরিদের বাজারে ইতিমধ্যেই দাম নিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে ক্রেতাদের দর কষাকষি শুরু হয়েছে। দরে বনলেই বিকিয়ে যাবে ‘আমির’, ‘সলমন’, ‘শাহরুখ’ নামের এই তিনটি ‘সিক্স প্যাক’ খাসি।
ধানবাদের দুই ব্যবসায়ী, বছর চল্লিশের কাঞ্চন দে ও বাদল দত্ত বেশ কিছু দিন ধরেই ছাগলের ব্যবসায় রয়েছেন। কাঞ্চন ও বাদল ধানবাদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের ছাত্র ছিলেন। সেখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে এই পশুপালন ও বিক্রির পেশায় এসেছেন। কাঞ্চনের কথায়, ‘‘কী ভাবে পশুর চাষ করা হয়, বেশি ওজন পেতে গেলে কী খাওয়াতে হয়, কী ভাবে ব্রিডিং করে বেশি ওজনের পশুর জন্ম দেওয়া যায় এগুলো আমরা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রেই শিখেছি। পড়াশোনা শেষ করেই আমরা এই ব্যবসায় নেমেছি। নানা পরীক্ষা করেই ‘আমির’, ‘সলমন’, ‘শাহরুখ’-এর ওজন এত ভাল হয়েছে।’’
প্রতি বার বকরিদের আগে পশু বাজারেই পাঁঠা-খাসি বিক্রি করেন ধানবাদের হিরাপুরের বাসিন্দা এই দুই ব্যবসায়ী। এ বার, শুধু ধানবাদের বাজারেই নয়, বিশেষ ভাবে প্রতিপালিত এই তিনটি খাসিকে তাঁরা ছেড়ে দিয়েছেন একেবারে অনলাইন মার্কেটে। প্রতিবারের মতো সাধারণ বাজারে বিক্রি না করে এ বার কেন অনলাইনে গেলেন? বাদল বলেন, ‘‘বাজারেও বিক্রি করছি। কিন্তু তার সঙ্গে তিনটে খাসি অনলাইনেও দিলাম। বুদ্ধিটা কাঞ্চনের। ও বলল, অনলাইনে তো এখন সব্জি থেকে শুরু করে জামাকাপড়, মোবাইল ফোন, গাড়ি, বিছানা, বালিশ সবই বিক্রি হচ্ছে। তাহলে পাঁঠা-খাসিই বা বিক্রি হবে না কেন? আর খাসি-পাঁঠা বিক্রির সেরা সময় তো এই বকরিদ বা ইদুজ্জোহা।’’
কাঞ্চন ও বাদল জানান, অনলাইনে বিক্রির জন্য তাঁরা এ বার তিনটি সেরা খাসি বেচেছেন। তাদের নামও দিয়েছেন তাঁরা। ‘আমির’, ‘সলমন’ ও ‘শাহরুখ!’ কেন এমন নাম? তিন সুপারস্টারকে ছোট করার জন্য কিন্তু পশুদের এমন নাম রাখেননি তাঁরা। কাঞ্চনের কথায়, ‘‘আমরা ‘আমির’, ‘সলমন’, ‘শাহরুখ’-এর ভক্ত। বকরিদের বাজারে দ্রুত বিক্রির জন্য বিভিন্ন পশুদের এ রকম নানা মজাদার নাম রাখা হয়। সেই ভেবেই রাখা।’’ ব্যাস্, ভাবামাত্রই কাজে নেমে গেলেন তাঁরা। তিনটে খাসির ছবি তুলে দিয়ে দিলেন ‘অনলাইন মার্কেট সাইট’—কুইকার-এ। এখনও অনলাইনে তিনটে খাসির একটাও বিক্রি হয়নি ঠিকই, কিন্তু ফোন আসছে অজস্র। ফোন আসছে ধানবাদের বাইরে থেকেও। দাম নিয়ে দরাদরিও চলছে। বাদলের কথায়, ‘‘এই যে দাম জিজ্ঞেস করছে, এটাও আমাদের লাভ। ওদের জানাচ্ছি, আমরা বিভিন্ন সাইজের খাসি-পাঁঠা বিক্রি করি। বিক্রি হোক বা না হোক আমাদের ব্যবসার পরিধি তো বাড়ছে।’’ এ বারের মরশুমে যদি তিনটেই অনলাইনে বিক্রি হয়ে যায়, তাহলে পরের বার অনলাইন বাজারে এই সংখ্যা বাড়বে।
অনলাইন সংস্থাটির হেল্পলাইনে ফোন করতে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুধু পাঁঠা-খাসিই নয়, নানা ধরনের পশু আমাদের ওয়েবসাইটে বিক্রি হচ্ছে। বকরিদের মরশুমে অনলাইনে খাসি-পাঁঠা বিক্রির প্রবণতা শুরু হয়েছে খুব সম্প্রতি। বিষয়টা অভিনব। ভাল ফিডব্যাকও পাচ্ছেন বিক্রেতারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy