মহাবীর (আনুমানিক ৫৯৯-৫২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) জৈনধর্ম ও দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি আনুমানিক ৫৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বর্তমান ভারতের বিহার প্রদেশের পটনার কাছে ক্ষত্রিয়কুণ্ড গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সিদ্ধার্থ, মাতার নাম ত্রিশালা বা প্রিয়কারিণী এবং স্ত্রীর নাম যশোধা। জৈন ধর্মবিশ্বাস অনুসারে তিনি ছিলেন এই ধর্মের ২৪তম এবং সর্বশেষ ‘তীর্থঙ্কর’ বা ধর্মগুরু।
১৪২৬ সনে মহাবীর জয়ন্তী উৎসব কাল:
বাংলা তারিখ: ৩ বৈশাখ ১৪২৬, বুধবার।
ইং তারিখ: ১৭/৪/২০১৯।
আসুন জেনে নেওয়া যাক মহাবীর ধর্মদর্শনের মূল কথা:
মহাবীরের ধর্মদর্শন নিরশ্বরবাদী এবং এই ধর্মদর্শনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে পার্থিব জীবনের উন্নতি সাধন করা। নৈতিক জীবনাচরণ ও সার্বিক জীবনধারণ অনুসরণ করে আধ্যাত্মিক মুক্তিলাভ তথা কৈবল্য লাভই তাঁর দর্শনের মূলভিত্তি। মহাবীরের দর্শনের দু’টি প্রধান দিক হচ্ছে: অধিবিদ্যা ও নীতিবিদ্যা। তাঁর অধিবিদ্যার ৩টি প্রধান দিক হচ্ছে: ১.অনেকান্তবাদ অর্থাৎ বস্তুর অসংখ্য গুণ বিদ্যমান। একে বহুত্ববাদও বলে; ২. স্যাদবাদ অর্থাৎ কোনও কিছু চূড়ান্ত সত্য নয়, সম্ভাব্য সত্য মাত্র। একে আপেক্ষিকতাবাদও বলা হয়। এবং ৩. কর্মবাদ। তাঁর নীতিবিদ্যার ৫টি প্রধান দিক হচ্ছে: সত্য, অহিংসা, ব্রহ্মচর্য, অস্তেয় ও অপরিগ্রহ। মহাবীরের নীতিশিক্ষামূলক অন্যতম বিষয়গুলো:
আরও পড়ুন: বৃশ্চিক রাশি ও লগ্নের ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন কেমন হয়
১। সদা সত্য কথা বলবে।
২। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩। এমন পরিমাণ সম্পদ সঞ্চয় করো না, যা তুমি তোমার জীবনে ব্যয় করতে পারবে না।
৪। সকলের প্রতি সৎ হও।
৫। অহিংসার পথ অনুসরণ কর।
৬। সব জীবন্তসত্ত্বার প্রতি করুণা প্রদর্শন কর।
মহাবীরের নিজের রচিত কোনও ধর্মগ্রন্থ নেই। শিষ্যগণ কর্তৃক তাঁর উপদেশাবলির সংকলনই জৈনধর্মদর্শন। এই ধর্মদর্শন অর্ধ-মাগধী, প্রাকৃত ও মহারাষ্ট্রীয় ভাষায় রচিত। পরবর্তীকালের গ্রন্থসমূহ অবশ্য সংস্কৃত ভাষায় রচিত। জৈনশাস্ত্র মূলত পূর্ব ও অঙ্গ, এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। বলা হয় যে, মহাবীরের উপদেশসমূহ পূর্বশাস্ত্রের ১৪টি গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়। এই গ্রন্থসমূহের সন্ধান এখন আর পাওয়া যায় না। মহাবীরের জীবন, দর্শন ও শিক্ষা চিরন্তন সত্যের সন্ধান দেয়। তাঁর মতে, যে কোনও সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ শান্তিপূর্ণ উপায়ে অহিংসার পথ অনুসরণ করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy