প্রতীকী চিত্র।
হিন্দু শাস্ত্র এবং আচার বা রীতির সঙ্গে শঙ্খ ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। প্রথমেই জানতে হবে, শঙ্খ কী? শঙ্খ এক প্রকার শামুক। সাধারণত এক প্রকার সামুদ্রিক শামুকের বহিরাবরণ বা খোলকেই শঙ্খ বলে। পৌরাণিক যুগ থেকে শঙ্খের ব্যবহার। পুরাণে বিভিন্ন দেবদেবীর অনুষঙ্গ থেকে বোঝা যায়, শঙ্খ ব্যবহার শুভ। শঙ্খ যে কেবল শুভ বাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় তা নয়, শঙ্খের অলঙ্কারও শুভ বলে বিবেচিত। হিন্দু বিবাহিত মহিলারা হাতে শঙ্খের তৈরি গহনা (শাঁখা) স্বামীর মঙ্গলার্থে ধারণ করেন।
সংস্কৃত শব্দ ‘শাম’ এবং ‘খাম’ শব্দ দু’টি থেকে ‘শঙ্খম’ শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ— যা পবিত্র বা শুদ্ধ জল ধারণ করে। শঙ্খের ধ্বনি ‘ওম’ শব্দের মতো পবিত্র। শঙ্খের ধ্বনিতে পরিবেশের নেতিবাচক শক্তি ধ্বংস হয়। শঙ্খের ধ্বনি জীবাণুনাশকও। শঙ্খের আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। শাঁখের (শঙ্খের) গুঁড়ো বা চূর্ণ বিভিন্ন রোগের ওষুধ (বিশেষত চর্মরোগের) তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। শুভ অনুষ্ঠান, যেমন পূজাপার্বণ, জন্ম, অন্নপ্রাশন, বিবাহ, উপনয়ন এবং সমস্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শঙ্খধ্বনি নেতিবাচক শক্তি ধ্বংস করে ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে।
শঙ্খধ্বনির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে পুরাণে ও মহাকাব্যে। মহাভারতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণের সৃষ্ট শঙ্খধ্বনি বিশেষ তাৎপর্পূর্ণ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সকালে যুদ্ধ শুরুর কালে এবং সন্ধেয় যুদ্ধের সমাপ্তিকালে শঙ্খধ্বনি করা হত। যে কারণে আজও সকালে শঙ্খ বাজানো হয় না, কেবল সন্ধ্যাকালে বাজানো হয়।
হিন্দুশাস্ত্র মতে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বরকে তুষ্ট করার জন্য তিন বার শঙ্খ বাজানোর রীতি। দিন এবং রাতের সন্ধিক্ষণে (সন্ধ্যা) গৃহে শঙ্খ বাজালে (তিন বার) দেবতাদের আশীর্বাদ লাভ হয়।
সমুদ্রমন্থন কালে চার বার শাঁখ বাজিয়ে দেবতা এবং অসুরদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। শাস্ত্রমতে, সেই কারণে তিন বারের অধিক শাঁখ বাজানো নিষেধ। অবশ্য জরুরি অবস্থায়, বিপদ কালে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তিন বারের বেশি শাঁখ বাজিয়ে সতর্ক করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy