Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja Celebration

পুজোর হাঁটাহাঁটিতে পায়ে ব্যথা? রইল সহজ সমাধান

আজকাল ত্রিশ পেরলেই হাঁটুর ব্যথা শুরু হয়। মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় যাকে ‘ক্রেপিতাস’ বলে।

ছবি: নিজস্ব চিত্র।

ছবি: নিজস্ব চিত্র।

চিন্ময় রায়
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:০৯
Share: Save:

পুজোর হইচই ‘টিল দ্য লাস্ট ড্রপ’ উপভোগ করতে হলে প্যান্ডলে বাবু হয়ে বসে থাকলে চলবে না। রাস্তায় পায়ে পা মেলাতে হবে— যাকে বলে ‘প্যান্ডেল হপিং’। শেষ রাতের অভিযান হোক বা ভোরবেলায় খালি পেটে, পায়ে পায়ে মুদিয়ালি থেকে মহম্মদ আলি পার্কের আবহটা চেখে দেখার অনুভূতিই আলাদা। কলকাতার যান চলাচলের যা হাল, তাতে যতই গাড়ি নিয়ে বেরন না কেন, একটা দূরত্ব আপনাকে হাঁটতেই হবে। সে ক্ষেত্রে আপনার দুটো পা-ই ভরসা। শুধু কি হাঁটা?ধুনুচি নাচ বা অষ্টমীর রাতে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে নাচ?সে সবের কী হবে? তাই এখন থেকেই পা দুটোর যত্ন নিন।

আজকাল ত্রিশ পেরলেই হাঁটুর ব্যথা শুরু হয়। মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় যাকে ‘ক্রেপিতাস’ বলে। সিঁড়ি ভেঙে উঠতে গেলে ব্যথা লাগে, একটানা হাঁটলে ব্যথা হয়। থাইয়ের পেশী হাঁটুর পিছনের হ্যামস্ট্রিং, হিপয়ের পেশী, পায়ের পিছন দিকটা— পর পর এই সব পেশীগুলোকে কসরতের মাধ্যমে তৈরি রাখলে, এরা পুজোর সময় বিদ্রোহ করবে না। শুধু ব্যায়ামগুলো করুন। তা হলেই আপনি অপ্রতিরধ্য গতিতে এক প্যান্ডেল থেকে অন্য প্যান্ডেলে ছুটবেন।ব্যায়ামগুলো বুঝে নিন।

হিপ টাচ স্কোয়াট

টুলের উপর উবু হয়ে বসার চেষ্টা করুন। হিপ যেন টুলে স্পর্শ করে। এবার ধীরে ধীরে স্কোয়াট করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ হাত দুটো সামনে রেখে ওঠা আর বসা। হাতে দুটো জলের বোতল রাখুন। মনে রাখবেন, জল ভর্তি ২ লিটারের বোতল ২ কেজি ওজনের সমান। ডাম্বল থাকলে তো কথাই নেই। ৩ সেটে ১২বার করে স্কোয়াট করুন। এতে থাইয়ের পেশী, হাঁটুর পিছনের হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়বে। দীর্ঘ দিন অনায়াসে হাঁটতে পারবেন। স্কোয়াট করার সময় হাঁটুতে লাগলে ভয় নেই। তারও উপায় রয়েছে। নীচের ব্যায়ামটি করুন।

সিটেড লেগ এক্সটেনশন

আরও পড়ুন: ভোরের শিউলি, রাতের ছাতিম নিয়ে পুজো আসছে​

আরও পড়ুন: রান্নাঘর সেজে উঠুক আধুনিকতার ছন্দে​

সিটেড লেগ এক্সটেনশন

একটা রবারের টিউব নিন। সাইকেলের টায়ারেযেমনটি থাকে। দোকানে পেয়ে যাবেন। চেয়ারের পায়ার নীচে টিউবটি গলিয়ে দিন। সোজা হয়ে চেয়ারে বসুন। টিউবের বাইরের ‌অংশে দুই পা গলান। পায়ের পাতার উপর টিউবটি থাকবে। এবার টিউবে গলানো অবস্থাতেই দুই পা একসঙ্গে সামনের দিকে তুলুন আর নামান। ৩ সেটে ১২ বার করে করুন।

এক পায়ে হিপ এক্সটেনশন

একটা টুল এর সামনে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। একটা হাঁটু ৯০ ডিগ্রি ভেঙে পা টুলের উপর রাখুন। অন্য হাঁটু ভেঙেও একই ভঙ্গিতে পা তুলবেন। তবে এ ক্ষেত্রে পা শূন্যে থাকবে। এবার টুলে রাখা পা দিয়ে হাঁটুতে চাপ দিন এবং মাটি থেকে কোমর ওঠান আর নামান। দু’-পায়ে ১২ বার করে করবেন। ৩ সেটে। এতে হিপয়ের পেশী এবং হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়বে। এই দুই পেশী সবল থাকলে হাঁটর সময় পিছনে টান পড়বে না।

স্টেপ আপ

এই ব্যায়ামের জন্য ছোট জলচৌকি হলে ভাল। নইলে বাড়ির সিঁড়িতেই প্র্যাকটিস করুন। দু’-হাতে জলের বোতল নিয়ে প্রথম সিঁড়িটা ছেড়ে দ্বিতীয়টায় উঠুন আর নামুন। একবার ডান পায়ে এবং একবার বাঁ পায়ে, ১২ বার করে ৩টে করে সেট করবেন। এতেও থাই এবং হিপের পেশী শক্তিশালী হয়।

টিউব সাইড ওয়াক

আরও পড়ুন: পুজোর আগেই চুলের যত্নে সেজে উঠুন আপনিও​

টিউব সাইড ওয়াক

একটি এলাস্টিক ব্যান্ডে দুই পা গলান। গোড়ালির উপর থাকবে ব্যান্ডটি। এবার দুই পায়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়ান। ওভাবে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটুন। ডান দিকে ১২ পা, বাঁ দিকে ১২ পা— ৩ বার রিপিট করুন। হিপয়ের পাশের পেশী হাঁটুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পায়ের ভারসাম্য রাখতে এর কোনও ভূমিকা নেই। এই ব্যায়ামে তাই লাভ হয়।

প্ল্যাটফর্ম কাফ রেজ

সিঁড়ির ধাপে উঠে দাঁড়ান। গোড়ালির অংশ স্পর্শ হতে দেবেন না। হাতে নিন জলভর্তি বোতল। এবার পায়ের পাতায় ভর রেখে গোড়ালি উপরে তুলুন আর নামান। এতে পায়ের পিছনের অংশ অর্থাৎ কাফ, হাঁটা চলায় যার গুপুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তার জোর বাড়ে।

ডু’জ অ্যান্ড ডোন্ট’জ

হিল জুতো পরে বেশি ক্ষণ হাঁটলে পায়ের পিছনের পেশী এবং কোমর ব্যথা হয়। তাই হিলের বদলে পাতলা সোলের জুতো পরে ঠাকুর দেখতে যাওয়া উচিত মেয়েদের। প্ল্যাটফর্ম হিলও পরতে পারেন। ছেলেরা স্নিকার পরলে ভাল।

খুব টাইট জুতো পরবেন না। এতে পায়ের রক্ত সঞ্চালনে বাধা আসে। গোড়ালির কাছে ব্যথা হয়। তাই সঠিক মাপের জুতো পরা উচিত।

ঘণ্টা দুয়েক হাঁটাহাঁটি করে বাড়িতে এসে বরফ জলে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসুন। পেশীর ক্লান্তি দূর হবে। পরের দিন পা ফ্রেশ থাকবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE