Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Winter Health problems

শীতকালে কেন বাড়ছে অ্যালার্জি রোগীর সংখ্যা? বায়ুদূষণ কি একমাত্র কারণ? কী বলছেন চিকিৎসক

শীতকালীন দূষণের কারণে কেন বাড়ে অ্যালার্জির সমস্যা? প্রশ্নের উত্তর জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

আগের বছরগুলির তুলনায় শীতকালীন অ্যালার্জিরর প্রকোপ যেন এ বছর অনেক বেশি।

আগের বছরগুলির তুলনায় শীতকালীন অ্যালার্জিরর প্রকোপ যেন এ বছর অনেক বেশি। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩৭
Share: Save:

শীতকালে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশির সমস্যা নতুন নয়। আট থেকে আশি— অনেকেই ভুগছেন এই সমস্যায়। এই মরসুমে সর্দি, জ্বরের পাশাপাশি বাড়ে অ্যালার্জির সমস্যাও। অফিসের সহকর্মী থেকে পাশের বাড়ির প্রতিবেশী, খুসখুসে কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে বিপর্যন্ত অনেকেই। আগের বছরগুলির তুলনায় শীতকালীন অ্যালার্জির প্রকোপ যেন এ বছর অনেক বেশি।

শীতের বাতাস এমনিতে ভারী হয়। বাতাসে ধূলিকণাও বেশি থাকে। সে কারণে সহজেই বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস মানুষের শরীরে চট করে প্রবেশ করে। তাই ভাইরাসজনিত রোগে শীতে বেশি করে দেখা দেয়। তার উপর বায়ুদূষণ তো রয়েছেই। অ্যালার্জির সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হল দূষণ। বছরের অন্যান্য সময় যে পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকে, তা কিন্তু নয়। তা হলে শীতকালীন দূষণের কারণে কেন বাড়ে অ্যালার্জির সমস্যা? শীতকাল কি অ্যালার্জির মরসুম হয়ে উঠছে ক্রমশ? এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

অ্যালার্জির সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হল দূষণ।

অ্যালার্জির সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হল দূষণ। প্রতীকী ছবি।

অদ্রিজা বলেন, ‘‘শীতকালে কেন অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়ে, সেটা জানতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে অ্যালার্জির কারণ। শরীরের কোষে ‘হিস্টামিন’ নামে একটি উপাদান বন্দি অবস্থায় থাকে। শরীরবান্ধব নয়, এমন কিছু জিনিস শরীরে প্রবেশ করে হিস্টামিনের বন্দিত্ব দশা ঘুচিয়ে দেয়। সেটি তখন রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। রক্তে মিশতেই এর খারাপ প্রভাব পড়ে শরীরে। শীতকালে এটা বেশি হয় কারণ, এই সময় ‘অ্যালার্জেন’-এর সংখ্যা বাতাসে বেশি পরিমাণে থাকে। চোখ চুলকানো থেকে হাঁচি, কাশি, সর্দি, গলা খুসখুস, শ্বাসকষ্ট, ‌র‌্যাশ— সবেরই নেপথ্যে রয়েছে হিস্টামিন।

শীতকালীন অ্যালর্জির জন্য কতটা দায়ী বায়ুদূষণ? চিকিৎসক বলেন, ‘‘সাংঘাতিক দায়ী। কিন্তু এখানে একটু বোঝার বিষয় রয়েছে। দূষণের কারণে যে সকলে একই রকম ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তা নয়। কিন্তু এক এক জনের অ্যালার্জির প্রবণতা বেশি থাকে। যেমন কারও রক্তে ‘ইয়োসিনেফিল’-এর পরিমাণ বেশি থাকে। কিংবা কারও হয়তো হিস্টামিন কোষ ভেঙে রক্তে মিশল না। সে ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন হবে। তবে শীতকালে বাতাসে দূষণের মাত্রা সব সময় বেশি থাকে। দীপাবলি পরবর্তী সময় থেকে এই দূষণ বাড়তে থাকে। শীতকালে শুকনো ধুলোও খুব বেশি ওড়ে। বছরের অন্যান্য সময়ে এই শুকনো ধুলো ওড়ে কম। কিন্তু শীতকালে এর পরিমাণ বেশি থাকে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেই যত দূর চোখ যায়, দেখা যাবে ধোঁয়ার চাদর। এই ধোঁয়া কিন্তু আমাদের জন্য খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। অনেকে ভাবে ঠান্ডার জন্যেই বোধহয় অ্যালার্জি হচ্ছে। তা হলে তো ঠান্ডার দেশে সকলে অ্যালার্জিতে ভুগতেন। তা তো হয় না। অ্যালার্জির আসল কারণ হচ্ছে বায়ুদূষণ।’’

হঠাৎ করেই এই শীতকাল অ্যালার্জির সমস্যা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ঘরে ঘরে একই পরিস্থিতি। অ্যালার্জির রোগী তো বটেই, এমনকি, এই রোগের সঙ্গে দূরদূরান্তে যাঁদের কোনও সম্পর্ক ছিল না, তাঁরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কী কারণে হচ্ছে এমন? অদ্রিজার কথায়, ‘‘এ বারে শীতকালীন সংক্রমণে আক্রান্ত এত রোগী অনেক দিন পরে দেখছি। কোভিডের সময় এই ধরনের সমস্যা নিয়ে প্রচুর রোগী এসেছিলেন। কিন্তু কোভিড পর্ব কিছুটা হলেও পেরিয়ে এসেছি। কোভিডের সময় আসলে সকলেই গৃহবন্দি ছিলেন। মাস্ক পরছিলেন। গাড়িও অনেক কম ছিল। অ্যালার্জি এবং অ্যাজ়মার রোগী অনেক কম দেখে ছিলেন। এ বারে অনেক বেশি দেখছি। পরে এই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয় আলোচনা হবে। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেল না কি প্রকৃতির কোনও পরিবর্তন হল, বুঝতে পারছি না। আমার চিকিৎসাজীবনে এত বেশি অ্যালার্জির রোগী আমি এর আগে সত্যিই দেখিনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

gallery Winter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy