খাদ্যাভ্যাসের কারণেও কি পিঠ-কোমরের ব্যথা হয়? ছবি: ফ্রিপিক।
পিঠ-কোমরের ব্যথা নিত্যদিনের সমস্যা। বিশেষ করে মরসুম বদলের সময়ে ‘লো ব্যাক পেন’ যেন আরও বেড়ে যায়। কোমরের ঠিক নীচের অংশে মারাত্মক যন্ত্রণা হয়। উঠতে-বসতে গেলে যেন মনে হয়, বিদ্যুতের ঝটকা লাগছে। এর কারণ কিন্তু জীবনযাপনের পদ্ধতি। যাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ চেয়ারে বসে কাজ করতে হয়, তাঁরা এমন ব্যথায় বেশি ভোগেন। যদি বসার ভঙ্গি ঠিক না হয়, তা হলে ব্যথা বাড়ে। আবার রোজের খাদ্যাভ্যাস, নেশার অভ্যাসও কিন্তু ব্যথা বহু গুণে বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই বিষয়ে অস্থিরোগ চিকিৎসক সুব্রত গড়াইয়ের মতে, “মেরুদণ্ডের একটা নির্দিষ্ট আকার রয়েছে। কিন্তু, ঠিক ভাবে না বসলে সেই আকার বজায় থাকে না। বেশি ক্ষণ সামনে ঝুঁকে বসলে কোমরের ডিস্কে চাপ পড়ে বেশি। তার থেকেও এ ধরনের ব্যথা হয়। মহিলাদের আবার ইস্ট্রোজেন হরমোন ওঠানামা করলে বা হাড়ে ক্যালসিয়াম কমে গেলেও ব্যথা হয়। যাঁরা বেশি হিল পরে হাঁটাচলা করেন, তাঁদের কোমরে চাপ পড়ে বেশি, তাই কোমর-পিঠের ব্যথা বেশি হয়।” মরসুম বদলের সময় তাপমাত্রার হেরফের ঘটে, তখন পেশিতে টান ধরা বা ব্যথা বেশি হয়। যাঁদের স্ট্রেচিং বা কোনও রকম শরীরচর্চা করার অভ্যাস নেই, তাঁরা ভোগেন বেশি। আবার কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন, তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে। চিকিৎসকের কথায়, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কিন্তু ব্যথা বাড়ে। যেমন প্রক্রিয়াজাত ভুট্টা, প্রক্রিয়াজাত মাংস দিয়ে তৈরি বার্গার, সসেজ়-সালামি বেশি খেলেও ব্যথা বাড়বে।
চিকিৎসক উদাহরণ দিয়ে বললেন, ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের জন্য খুব ভাল। কিন্তু যখনই সেটি ‘প্রসেস’ করা হচ্ছে, তখন তার সঙ্গে বিভিন্ন রাসায়নিক মিশছে। প্রক্রিয়াজাত ভুট্টার দানা সালফিউরাস অ্যাসিডের দ্রবণে ডোবানো হয়, পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে চিনি ও মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট নামে এক ধরনের উপাদান মেশানো হয়, যা এর স্বাদ বাড়ায়। এই সব উপাদান শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এগুলি পেশির নমনীয়তা কমায়। একই ভাবে প্রক্রিয়াজাত মাংস সংরক্ষণের জন্য যে যে রাসায়নিক মেশানো হয়, তা পেশি ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই কোমর বা পিঠের ব্যথায় ভুগলে, এই সব খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
ব্যথা কমাতে খেতে হবে ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ যুক্ত খাবার, যেমন সয়াবিন, বিভিন্ন রকম বাদাম। সম্ভব হলে সূর্যমুখীর বীজ, চিয়া বীজ রাখা যেতে পারে ডায়েটে। ছোট মাছ বেশি করে খেতে হবে। সবুজ শাকসব্জি খেতে হবে, যা থেকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে পাওয়া যাবে। আপেল, আনারস, আঙুর, বেরি জাতীয় ফল খাওয়াও ভাল। নিয়ম করে ফল খাওয়ার অভ্যাসে দূরে পালাবে এই ধরনের রোগবালাই। ভিতর থেকে সুস্থ থাকবে শরীর। কমবে ব্যথা-বেদনাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy