গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। ছবি: সংগৃহীত।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। শুক্রবার মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অভিনেতাকে ভর্তি করানো হয়েছে। সকালেই অভিতাভের অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা হয়েছে বলে খবর।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, পায়ে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয়েছে অমিতাভের। যা শুনে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, কারও পায়ে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয় কী করে? বিষয়টি বুঝতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল শহরের চিকিৎসকদের সঙ্গে।
যদিও শুক্রবার রাতেই অমিতাভকে দেখা গিয়েছিল ইন্ডিয়ান স্ট্রিট প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে। নিজের দল মুম্বাইকে সমর্থন করতে মাঠে এসেছিলেন অমিতাভ। সেই সময় সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে অমিতাভ বলেন, ‘‘পুরোটাই রটনা।’’ খেলার মাঠে খোশমেজাজেই দেখা গিয়েছিল অভিনেতাকে।
ঠিক কখন করানো হয় অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি?
‘অ্যাঞ্জিয়ো’ কথার অর্থ হল রক্তবাহ এবং ‘প্লাস্টি’ শব্দটির অর্থ হল খুলে দেওয়া। অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হল করোনারি হার্ট ডিজ়িজ়ের একটি বহুল প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি। ধমনীর ভিতরের দিকে ‘প্লাক’ জমলে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি পদ্ধতিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া ধমনী খুলে দেওয়া হয়। ‘প্লাক’ রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ফলে তৈরি হয়। ধমনীর এই রকম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে চিকিৎসার ভাষায় বলে ‘অ্যার্থেরোস্কেলেরোসিস’।
সূত্রের খবর ছিল, পায়ে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয়েছে অমিতাভের। সাধারণত হৃদ্যন্ত্রজনিত সমস্যায় অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা হয়। তবে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘পায়ের রক্তবাহগুলিতে কোনও কারণে রক্ত জমাট বাঁধলেও অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা হতে পারে।’’ যদিও অমিতাভের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়েও এখনও পরিবারের তরফে কোনও তথ্য জানানো হয়নি। ঠিক কী কারণে অমিতাভের অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয়েছে, তা এখনও জানা জায়নি। হার্টের শল্য চিকিৎসক তাপস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পায়ে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি অনেক সময়েই করা হয়। খুব বিরল কোনও ঘটনা নয় এটি।’’ তাপসবাবুর বক্তব্য, পায়ে রক্ত জমাট বাঁধলে অনেক সময়ে পায়ে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করানো হয়। বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এ ধরনের সমস্যা। ফলে এই চিকিৎসা বয়স্কদের ক্ষেত্রেই বেশি হয়।
অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করার জন্য সাধারণত ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে (রোগের জটিলতা) সময়ের হেরফের হতেই পারে।
অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির পরে কী কী সতর্কতা নিতে হয় রোগীকে?
অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি পেশিতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে। রোগী জীবনের ঝুঁকি কমে যায়। তবে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করানোর পরেও রোগীকে বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হয়।
১) অস্ত্রোপচারের ১২ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় রোগীকে চিকিৎসকদের কড়া নজরদারিতে রাখা হয়।
২) এই অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে একেবারেই কায়িক পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। যত ক্ষণ না রোগী পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছেন, তত ক্ষণ অন্যের সাহায্য নিতে হবে।
৩) যে কোনও অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময় মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে রোগীর। সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে। রোগীর নিজেকে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির পর রোগীকে সুস্থ জীবনে ফিরতে কত সময় লাগে?
মূলত তিন ভাবে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা হয়। স্টেন্ট বসিয়ে, বেলুন পদ্ধতিতে এবং বাইপাস করে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পর সাধারণত রোগীর সুস্থ হতে তিন থেকে ছ’সপ্তাহ সময় লাগে। তবে পুরো বিষয়টিই নির্ভর করে রোগীর বয়স এবং তাঁর কোনও ক্রনিক অসুখ আছে কি না, তার উপর। সে ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগতে পারে। তবে অস্ত্রোপচারের পর সাধারণত রোগীকে ৩ মাস বিশ্রাম নিতে বলা হয়, কঠোর পরিশ্রম করতে বারণ করা হয়।’’
গত বছর মার্চ মাসে হায়দরাবাদে ‘প্রজেক্ট কে’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন অমিতাভ। অভিনেতার বুকের পাঁজরের তরুণাস্থি ও ডান পাঁজরের পেশি ছিঁড়ে যায়। তার পর চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কয়েক মাস বিশ্রামে ছিলেন অভিনেতা। চলতি বছরের শুরুতেই অমিতাভের কব্জিতেও অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy