Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Misophonia

কেউ আওয়াজ করে খাবার খেলে বিরক্তি, শিশুর কান্নাও অসহ্য লাগে! কী রোগে ভুগছেন আপনি?

হেঁশেলের মিক্সির শব্দ, রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ, এমনকি শিশুর কান্নার শব্দ শুনলেও শরীরে অস্বস্তি হতে থাকে অনেকের। এই লক্ষণ কিন্তু স্বাভাবিক নয়।

What triggers Misophonia, what are the symptoms

কেন সামান্য শব্দেও বিরক্ত হন আপনি, কারণ জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ১২:৪৮
Share: Save:

ফোন বাজার শব্দ শুনলেই কি প্রচণ্ড বিরক্তি হয় আপনার? তার পর ধরুন, আপনার পাশেই বসে কেউ মনের সুখে কচরমচর করে চিপ্‌স চিবোচ্ছেন, তখন কি বিতৃষ্ণায় ভরে যায় মন? হেঁশেলে মিক্সির আওয়াজ, রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ, কেউ চায়ের পেয়ালায় আয়েশ করে চুমুক দিল সেই আওয়াজেও যদি বিরক্তি আসে, তা হলে সমস্যাটা গভীরে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শ্রুতিমধুর শব্দও যদি কেউ সহ্য করতে না পারেন, তা হলে তিনি স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘মিসোফোনিয়া’।

মিসোফোনিয়া মস্তিষ্কের এমন এক অসুখ, যেখানে সামান্য শব্দও কষ্টের কারণ হয়ে ওঠে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মিসোফোনিয়ার রোগী শ্বাসের ওঠাপড়ার শব্দেও বিরক্ত হন। পাশে বসে কেউ জোরে শ্বাস নিলে বা কথা বললেও তাঁর কষ্ট হতে পারে। অনেক সময় মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয়। শরীরে অস্বস্তি হয়, বমি ভাব থাকে। এই রোগীরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পান। কারণ, যানবাহনের আওয়াজ, মানুষের কোলাহল তাঁরা নিতে পারেন না। গাড়ি যদি জোরে হর্ন বাজায়, সঙ্গে সঙ্গে মাথার যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায়। শরীর খারাপ করতে শুরু করে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অকুল সেন জানাচ্ছেন, মিসোফোনিয়ার এমন রোগীও আছেন, যাঁরা শিশুর কান্নার শব্দেও প্রচণ্ড বিরক্ত হন। দেখা গিয়েছে, ৬ মাসের শিশুর কান্নার শব্দেও তাঁদের শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছে। বিরক্ত হচ্ছেন তাঁরা, রাগের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে। এমন রোগীরা নিজেরাও জানেন না, তাঁরা স্নায়ুর জটিল সমস্যায় ভুগছেন। কেউ জোরে কথা বললেও তাঁরা বিরক্ত হন। এমনকি এ-ও দেখা গিয়েছে, পাশে বসে কেউ আওয়াজ করে জল খেলে বা খাবার খেলেও তাঁদের সমস্যা হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ফেলেন।

মিসোফোনিয়া বোঝার অনেক লক্ষণ আছে। যদি দেখা যায়, সামান্য শব্দেও মাথা যন্ত্রণা শুরু হল, হৃদ্‌স্পন্দনের হার বেড়ে গেল, বুক ধড়ফড় করা, বমি পাওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পেল, তখন দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শব্দ যদি প্রচণ্ড বিতৃষ্ণার কারণ হয়ে উঠতে থাকে এবং রোগী নিজেকে বাইরের জগৎ থেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন, তা হলে মনোবিদের কাছেও যেতে হতে পারে। স্নায়ুর এই রোগ ধীরে ধীরে মন ও মস্তিষ্কের জটিল সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তখন লোকজনের সঙ্গে কথা বলা, দেখা করার ইচ্ছাও চলে যাবে। রোগী একা, চার দেওয়ালের মধ্যেই থাকতে পছন্দ করবেন। সে ক্ষেত্রে ‘কগনিটিভ-বিহেভিয়ারাল’ থেরাপির মাধ্যমে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি, নিয়মিত শরীরচর্চা, ধ্যান, প্রাণায়াম করাও পরামর্শ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE